নীতিমালা কোন আইন নয় : তথ্যমন্ত্রী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : জাতীয় সম্প্রাচার নীতিমালা নিয়ে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সম্প্রচার নীতিমালা হচ্ছে দিক নির্দেশনামূলক। এটি কোন আইন নয়। এতে শাস্তির কোন বিধান নেই। তাই কন্ঠরোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও কল্পনাপ্রসূত।
সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে গেজেট আকারে প্রকাশিত জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা’র বিতর্কিত কয়েকটি অধ্যায়ের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা এটি কোন আইন নয়। এটি হচ্ছে দিক নির্দেশনামূলক। এতে শাস্তির কোন বিধান নেই। তাই কন্ঠরোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও কল্পনাপ্রসূত। সম্প্রচার মাধ্যমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নতকারণে সাহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে এর প্রণয়ন এর প্রতিটি ধারাই গণমাধ্যমের জন্য কল্যাণকর ও সম্প্রসারের সহায়ক।
‘সম্প্রচার নীতিমালা কোনভাবেই সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, নীতিমালার উদ্দেশ্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে। নীতিমালার যৌক্তিত ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আইন প্রনয়োনের সময় আলোচনার সুযোগ থাকবে।’
তথ্যমন্ত্রী জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের জন্য নয়’ দাবি করেছে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এ নীতিমালা গণমাধ্যমের ওপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যও নয়। সম্প্রচার নীতিমালা দিকনির্দেশক, আইন নয়। সম্প্রচারের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতেই এই নীতিমালা করা হয়েছে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, গণমাধ্যমের ওপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের যৎসামান্য পরীবিক্ষণের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেখান থেকেও তথ্য মন্ত্রণালয়ের হাত গুটিয়ে নিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিতের জন্যই স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমকে দেখভাল করার দায়িত্ব একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশনের হাতে তুলে দিতে চায়।
তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রাইমনিউজ.কম.বিডির
পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো :
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত আলোচনায় উল্লেখিত যে কয়েকটি বিষয় আমাদের নজরে এসেছে সেগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-
প্রথমত : এই নীতিমালা গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করবে কি না?
সম্প্রচার নীতিমালা হচ্ছে দিক নির্দেশনামূলক। এটি কোন আইন নয়। এতে শাস্তির কোন বিধান নেই। তাই কন্ঠরোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও কল্পনাপ্রসূত। সম্প্রচার মাধ্যমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নতকারণে সাহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে এর প্রণয়ন এর প্রতিটি ধারাই গণমাধ্যমের জন্য কল্যাণকর ও সম্প্রসারের সহায়ক।
দ্বিতীয়ত : ‘সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কোন সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রতি কটাক্ষ বা বিদ্রুপ কিংবা পেশাগত ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী দৃশ্য বা বক্তব্য প্রচার করা যাবে না।’
-এক্ষেত্রে বিভ্রান্তির কোন অবকাশ নেই। কারণ, এ ধারা আমাদের সত্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে বলেনি। সম্প্রচার নীতিমালা বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে নৈতিক অবক্ষয় রোধ সম্প্রচার মাধ্যমের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রণীত। অর্থাৎ কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তার বস্তুনিষ্ঠ প্রকাশে কোন বাধা নেই। কিন্তু, কোন কটাক্ষ বা বিদ্রুপ বা সেই সংস্থার বিরুদ্ধে ঢালাও মন্তব্য করা অনৈতিক। যেমন, কয়েকজন সাংবাদিক নামধারীর হলুদ সাংবাদিকতার জন্য আপনি পুরো গণমাধ্যমকেই কটাক্ষ, বিদ্রুপ বা ব্যাঙ্গ করতে পারবেন না। সেটি অনৈতিক এবং অপরাধ।
অর্থৎ- ‘প্রতিরক্ষা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রতি বিদ্রুপ বা পোশাগত ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী দৃশ্য বা বক্তব্য প্রদর্শন করা যাবে না, কিন্তু কোন বাহিনীর কোন সদস্যের অনৈতিক কাজ সংশোধনের নিমিত্তে ধারণকৃত বিষয়বস্তু প্রদর্শনের অনুমতি রয়েছে। ,