হরতালের মাঠে জামায়াত নেই

hrtalরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আদালত অবমাননার দায়ে তিন নেতার সাজার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল শুরু হয়েছে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে।

হরতালে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সোমবার ভোর থেকেই রাজধানীর প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যর‌্যাব সদস্য অবস্থান নেন। প্রথম দুই ঘণ্টায় রাজধানীর কোথাও কোনো গোলোযোগের খবর পাওয়া যায়নি। হরতালকারীদের উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতাও দেখা যায়নি কোথাও।

তবে জামায়াত রোববার দুপুরে হরতাল ডাকার পরপরই রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বাড়ি লক্ষ্য করে পর পর চারটি হাতবোমা ফাটানো হয়। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাই কোর্টের পাশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকের বাইরে প্রাচীরে একটি হাতবোমা ফাটানো হয়। কালো টেপে মোড়ানো আরো তিনটি হাতবোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুরিশ।

তথ্যমন্ত্রীর সন্দেহ, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী, যারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতায় নাশকতা চালিয়ে আসছে, তারাই তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।

সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে রিকশা ও অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। বাস ও প্রাইভেট কারের সংখ্যাও অন্যান্য হরতালের দিনের তুলনায় বেশি।কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকালে নির্ধারিত সময়েই সব ট্রেন যাওয়া আসা করেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিচারাধীন বিষয়ে বক্তব্য দেয়ায় সোমবার সকালে এক আদেশে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য সাংসদ হামিদুর রহমান আযাদকে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং তিন হাজার জরিমানা, অনাদায়ে আরো ২ সপ্তাহের কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

আর জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মো. সেলিম উদ্দিনকে এক দিনের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে এক সপ্তাহের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

এদের মধ্যে সেলিম গ্রেপ্তার হয়ে আদালতের কাছে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেও বাকি দুইজন হাজির না হওয়ায় তাদের পলাতক দেখিয়েই রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল।

অবশ্য আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদকে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। বিভিন্ন সময়ে বিবৃতিও দিয়েছেন তারা।

ট্রাইব্যুনালের আদেশের তিন ঘণ্টার মাথায় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা এই হরতাল ডাকেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের সাজার আদেশে জামায়াত নেতৃবৃন্দ ‘ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত’ হয়েছেন।

“তাই দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার, গণনির্যাতন বন্ধ, গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনর্বহালের দাবিতে আমি আগামীকাল (সোমবার) দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”

জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ‘যেনতেন উপায়ে’ শাস্তি দিয়ে জামায়াতকে ‘সমূলে উৎপাটন’ করাই এ সরকারের উদ্দেশ্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ