আগ্রহী ৪৩ দলের অধিকাংশই অযোগ্য

ballotxরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৪১টিই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতা’ প্রমাণ করতে পারেনি।

ত্র দুটি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও কমিটি থাকার তথ্য  দিয়েছে, যা যাচাইয়ের উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাছাই কমিটির কর্মকর্তারা জানান, সোমবার কমিশন বৈঠকে আগ্রহী সব দলের নথিপত্র উপস্থাপন করা হচ্ছে।

এই বাছাই কমিটির এক কর্মকর্তা এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “সময় খুব স্বল্প। আংশিক তথ্য দিয়েছে এমন কিছু দলকে শর্তপূরণের জন্য সময় দেওয়া যাবে কিনা তা কমিশন বিবেচনা করবে।”

কমিশনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের আবেদন করে এসব নতুন দল।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, “৪৩টি দলের আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। যারা যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে পারেনি তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।”

নিবন্ধন যাচাই কমিটির কর্মকর্তারা জানান, তারা ইতোমধ্যে এসব দলের নিবন্ধন ফি, গঠনতন্ত্র ও আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। দেখা গেছে, কোনো দলই ইসির চাহিদা অনুযায়ী ‘পূর্ণাঙ্গ তথ্য’ জমা দেয়নি।

এরপরও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নামে দুটি দলের মাঠ পর্যায়ের অফিস ও দলীয় কাঠামোর তথ্য অনুসন্ধানের জন্য বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশ নিউ সংসদ লীগ (বিএনএসএল), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ (বিজেএল), বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলাহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি এবং বাংলাদেশ গণঅধিকার দল ‘আংশিক তথ্য’ জমা দিয়েছে।

“মাঠ কর্মকর্তারা অনুসন্ধান করে তথ্য পাঠানোর পর নতুনদের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব”, বলেন শাহনেওয়াজ।

‘নাম ও প্যাড সর্বস্ব’ কোনো দল নিবন্ধন পাবে না জানিয়ে ইসি সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন,  আদৌ কোনো নতুন দল নিবন্ধন পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। সব শর্ত পূরণ করতে পারলে দুটির বেশি দলকে নিবন্ধন দেয়া হবে না।

ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিক জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে খুব বেশি সময় না থাকায় জুন মাসের মধ্যেই নিবন্ধনের বিষয়টি ফয়সালা করা হবে।

আইন অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হতে পারে।শর্তগুলো হলো- ১. দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একটি সংসদীয় আসন পায়।

২. যে কোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী যদি সংশ্লিষ্ট আসনে পড়া মোট ভোটের ৫ শতাংশ পায়।

অথবা, ৩. দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ [২১ টি] প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।

নতুন কোনো দলকে নিবন্ধন পেতে হলে শেষ শর্তটিই পূরণ করতে হয়।

আবেদনকারী বাকি দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জালালী পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিপিডিপি),  বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (একাংশ), বাংলাদেশ আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী), মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিজম ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল (বি জে ডি), গণ-অধিকার পার্টি (পিআরপি), বাংলাদেশ গণসেবা আন্দোলন (বিজিএ), বাংলাদেশ জনতা দল, বাংলাদেশ প্রবাসী দল (বিপপা), বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ (বিএসএল), গণতান্ত্রিক ইসলামিক মুভমেন্ট, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন (এমআরএ), জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি,  বাংলাদেশ পিপলস্ লীগ (পিপলস্ লীগ), পাবলিক পার্টি, বাংলাদেশ জনগণতান্ত্রিক দল (বিপিডি), মাতৃভূমি দল (মাভূদ), বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি), বাংলাদেশ গণশক্তি দল, বাংলাদেশ বামফ্রন্ট, জনতা মহাজোট বাংলাদেশ, সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পার্টি (বাংলাদেশ), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী), বাংলাদেশ গ্লোরিয়াস পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টি (বা মা পা), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী), বাংলাদেশ রেড স্টার পার্টি (বিআরএসপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, কৃষক শ্রমিক পার্টি, ডেমোক্রেটিক পিপলস্ পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানী।

নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ সাদিক জানান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল নামে আগে নিবন্ধন চাওয়া একটি সংগঠনকে অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে নিবন্ধন পাওয়া দলের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৯টিতে।

বিএমএল নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল নবম সংসদ নির্বাচনের আগে। ওই সময়ে তাদের নিবন্ধন দেওয়া হয় নি। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দলটিকে নিবন্ধন দেয়া হচ্ছে।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয় ইসি। পরে সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দিতে না পারায় ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ