সারাদেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াত

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বুধবার এক বিবৃতিতে এই হরতালের ঘোষণা দেন।

ট্রাইব্যুনাল ‘বাতিল’ করে জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান ও সাবেক আমীরসহ বিরোধী দলের সব আটক নেতাকর্মীর মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দলটির পক্ষ থেকে বুধবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ঢাকায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর দিকের সড়কে সমাবেশ করার জন্য মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করে দলটি।

“কিন্তু সরকার অনুমতি না দিয়ে যারা আবেদন করেছিল তাদের উল্টো গ্রেপ্তার করেছে”, বলেন রফিকুল ইসলাম।

বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকারের এহেন অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

একাত্তরে ধুন, ধর্ষণ লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম রায়ে গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতের সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একই ধরনের অভিযোগে জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযম, বর্তমান আমীর মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ আট নেতা ও বিএনপির দুই নেতারও বিচার চলছে ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে দুটি মামলা শুনানি শেষে রায়ের পর্যায়ে রয়েছে।

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই এই বিচারের বিরোধিতা করে এলেও গত কিছুদিন ধরে দলটির নেতাকর্মীরা সারা দেশে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরসহ বিভিন্নভাবে সহিংসতায় জড়াচ্ছে।

এ কারণে সরকারের শরিক দলগুলোসহ বিভিন্ন মহল থেকে জামায়াতে ইসলামীর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জোরালো দাবি এসেছে। এ দাবিতে হরতালও করেছে সিপিবি, বাসদসহ কয়েকটি বাম দল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে সর্বশেষ গত সোমবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর চালায় জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা।

এসব ঘটনায় ত্রিশ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হন। ভাংচুর করা হয় দুই শতাধিক যানবাহন।

এসব ঘটনায় সারাদেশে পুলিশের দায়ের করা মামলায় জামায়াত-শিবিরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে শতাধিক।

এদিকে জামায়াতের কর্মসূচির ঘোষণা থাকায় বুধবার সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয় পুলিশ ও র‌্যাব। সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া না হলেও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সাঁজোয়া যান ও জলকামানসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়।

সকালে বায়তুল মোকাররম সংলগ্ন সড়কগুলোতে যান চলাচলও স্বাভাবিকের তুলনায় কম ছিল।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ