মহাচোর ধরতে চোরের পক্ষ নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী !
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, রাজশাহীঃ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হচ্ছে চোর-বাটপার। ওইসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় অনেকেই আমার সমালোচনা করেছেন। তবে আমি জেনেশুনে চোরদের পক্ষ নিয়েছি, যাতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। ওইসব মহাচোরদের শনাক্ত করে উৎখাত করা হবে এবং ছোট চোরদের সংশোধন করা হবে।’
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক ও পুরস্কার এবং বিশিষ্ট গবেষকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সম্পর্কে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এ প্রসঙ্গের অবতারণা করেন।
গত ৩০ জুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। বেশকিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থের লেনদেন হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
শুধু সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে জ্ঞানচর্চা, গবেষণা এবং নতুন জ্ঞান সৃজনের জন্য। এই কাজ করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনে কোনো কাজে আসবে না। দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণালব্ধ নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন করতে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় তরুণ প্রজন্ম আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে তৈরি হবে না। এ জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা। গতানুগতিক শিক্ষার আমূল পরিবর্তন করে অর্থপূর্ণ জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের ধারায় শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। আমরা সেই কাজ করে যাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান, কোষাধ্যক্ষ সায়েন উদ্দিন আহমদ। সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ‘সারোয়ার জাহান স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সাইদুর রহমানকে উচ্চমানের গবেষণার জন্য ‘সারোয়ার জাহান গবেষণা স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৪ জনকে ‘অগ্রণী ব্যাংক স্বর্ণপদক’, ৮ জনকে ‘এ কে খান স্বর্ণপদক’ এবং ৫ জনকে ‘ড. মমতাজউদ্দিন আহমদ স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফোকলোর চত্বরে শেখ রাসেল মডেল স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।