অর্থমন্ত্রী উদারবাদীদের দালাল : আবুল বারাকাত
মনির হোসেন মিন্টু, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রীকে দালাল বলে আখ্যায়িত করেছেন জনতা ব্যাংকের বিদায়ী চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত।
বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘জনতা ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতার পাঁচ বছর ২০০৯-২০১৩’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী অধ্যাপক আবুল বারাকাতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে মনে কষ্ট পেয়ে আমার সম্পর্কে এসব কথা বলছেন।’ তারও একদিন আগে জনতা ব্যাংকের বিদায়ী চেয়ারম্যান আবুল বারাকাত বলেছিলেন, ‘নৌকা বাইচের জন্য অর্থমন্ত্রীর সুপারিশ করা অর্থ না দেওয়ায় তিনি জনতা ব্যাংকের সিএসআর ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছেন।’
অধ্যাপক আবুল বারকাত জনতা ব্যাংকের কাগজপত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে বলেন, ২০১৩ সালে সব বাদ দিয়ে নিট মুনাফা ৯৫৫ কোটি টাকা। যা ব্যাংকিং ইতিহাসে বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি ৫৬ টি ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০০৮-২০১৩ সালে জনতা ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ১১৬ শতাংশ এবং মোট সম্পদ বেড়েছে ১১৯ শতাংশ।
পারিবারতন্ত্রে অর্থমন্ত্রী প্রথম স্থান অধিকার করেছেন উল্লেখ করে অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, যোগ্যতা না থাকা সত্বেও অর্থমন্ত্রী নিজের ভাই-ভাগ্নে স্বজনদের রাষ্ট্রীয় কাজে বসিয়েছেন। এটি সংবিধানের লংঘন।
অর্থমন্ত্রী বুদ্ধিবৃত্তিক জালিয়াতি করেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের জন্য ক্ষতিকর তদবির করেন অর্থমন্ত্রী। একটি টিভি চ্যানেলের জন্য ৪০ কোটি টাকা ননফান্ড থেকে ফান্ড হিসেবে দেওয়ার জন্য তিনি আমার কাছে তদবির করেন। আমি তার তদবিরের কারণে টাকা দিয়েছি। এর দায় অর্থমন্ত্রীকে নিতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মিথ্যা কথা বলতে পারদর্শী উল্লেখ করে বারাকাত বলেন, তিনি অবলীলায় মিথ্যা কথা বলতে পারেন। মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে শেখেননি তাই কথায় কথায় তিনি রাবিশ, ফটকা এইসব শব্দ ব্যবহার করেন।
অর্থমন্ত্রী বিশেষ একটি শ্রেণিকে সুবিধা দিয়ে থাকেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যহার করে নিজ এলাকার এলিট শ্রেণির মানুষদের বেশি সুবিধা দিচ্ছেন। তিনি প্রজাতন্ত্রের সেবা না করে ক্ষতি করছেন।
আবুল বারকাত বলেন, জনতা ব্যাংকের কোনো অবক্ষয় ঘটেনি। আমি যা বলেছি তা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই বলেছি। অর্থমন্ত্রী না জেনেই ওইসব কথা বলেছেন। তার জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। আমি যে তথ্য দিয়েছি তা তিনি জানেন কি না? যদি জানেন তাহলে এটা তার অজ্ঞানতা।