পুলিশ চেকপোষ্ট থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে উদ্ধার
মনির হোসেন মিন্টু, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : রাজধানীর পুলিশ চেকপোষ্ট থেকে অপহৃত কাপড় ব্যবসায়ী মোস্তফা কাওসার বাপ্পিকে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাপ্পির পিতা হাজী মান্নান শাহাবাগ থানার দোয়েল চত্তর এলাকায় অপহরনকারীদের হাতে এই টাকা দিয়ে তার সন্তানকে ছাড়িয়ে আনেন। অপহরনকারীরা এখান থেকে টাকা নিয়ে কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনে একটি মাইক্রোবাসে করে বাপ্পিকে নামিয়ে দিয়ে যায়।
বাপ্পির পিতা ও তার বড় ভাই হারুন জানান, তাদের জুড়াইনের বাসায় ফিরছিলেন। পথে খিলখেত ফ্লাই ওভারের সামনে সাদা পোশাকধারী পুলিশের চেকপোষ্টে বাপ্পিকে বহনকারী সিএনজিকে থামানো হয়। এসময় বাপ্পি তার ভাই ও পিতার সঙ্গে কথাও বলেন। তাকে এই চেকপোষ্টে থামানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। এর পর থেকে বাপ্পির মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। গভীর রাতে অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে বাপ্পির পিতাকে ফোন করে জানানো হয় তাদের বাপ্পি আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না। বাপ্পির পিতা ও ভাই ক্যান্টমেন্ট থানার পরামর্শে খিলখেত থানায় গিয়ে রাতেই একটি জিডি করেন (জিডি- ৫২৬, তারিখ ১১.০৯.২০১৪)। সকালে বিষয়টি র্যাব- ১’এর এএসপি আসাদকে (০১৭৭৭৭১০১৩৩) জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। র্যাবও অপহরণকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করে।
শুক্রবার সকালে অপহরণকারীরা দ্রুত ৮ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য মোবাইলে বাপ্পির পিতাকে চাপ দিতে থাকে। বিষয়টি র্যাব ও খিলখেত থানা পুলিশকে জানালেও এবিষয়ে তাদেও তেমন তৎপরতা না দেখে হতাশ হয়ে পড়ে বাপ্পির পরিবার। দুপুরে অপহরণকারীরা বাপ্পিকে মেরে একটি হাত থেতলে দেয়। এসময় বাপ্পির পরিবারকে বাপ্পির চিৎকার শুনানো হয়।
অপহরণকারীরা সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বাপ্পির পিতাকে শাহাবাগ থানার পাশে টাকা নিয়ে যেতে বলে। বাপ্পির পিতা হাজী মান্নান ৮ লাখ টাকা নিয়ে শাহাবাগে এলে অপহরনকারীরা টাকা নিয়ে টিএসসিতে যেতে বলে। এর পর আবারো স্থান পরিবর্তন করে দোয়েল চত্তরে যেতে বলে। দোয়েল চত্তরে লাল রংয়ের একটি হােন্ডায় করে দু’ব্যক্তি এসে বাপ্পির পিতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। এর কিছু সময় পর অপহরণকারীরা কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে একটি মাইক্রোবাসে করে এনে নামিয়ে দিয়ে যায়। বাপ্পির পিতা ও ভাই কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে বাপ্পিকে উদ্ধর করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে যায়।
উদ্ধার হওয়া বাপ্পি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমাকে যারা অপহরণ করেছিল তারা খিলখেতের একটি চেকপোষ্টে পুলিশের হাতে যা যা থাকে, তাই নিয়ে তল্লাশির কাজ করছিল। পুলিশের গাড়ি, শর্টগান, রাইফেল, পিস্তল, হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি’ সব কিছুই ছিল তাদের হাতে।’
শরিরের অবস্থার কারনে এর চেয়ে বেশি কথা বলতে পারেন নাই তিনি।