সুপারসনিক গতিতে সংশোধন কেন : ড. কামাল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ‘সুপারসনিক’ গতিতে করা হচ্ছে বলে মনে করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ধরনের মেজর সংশোধনী আনতে প্রয়োজন ছিল আলাপ-আলোচনার। সংশোধনীর পক্ষে-বিপক্ষের মতামত তুলে ধরার দরকার ছিল।’
অভিশংসন আইন করার সময় বিশেষজ্ঞদের মত নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রীআজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপ অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।
কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় সংসদ কি ৪২ বছর নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছে? তাহলে সংসদ কীভাবে বিচারকদের অপসারণের সময় নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে? আমাদের সংসদের কাজ হয় দলীয়ভাবে। পার্টি অসন্তুষ্ট হয় এমন কোনো কাজ সদস্যরা করতে পারেন না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হুসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এই সংশোধনী আনার পর বিচার বিভাগ হুমকির মুখে পড়বে। কারণ সংসদে কোনো পরিবর্তন হয় না। সেখানে ঘুরেফিরে এক ব্যক্তির শাসন। সংসদের ভেতরেও গণতন্ত্র নেই, দলগুলোর মধ্যেও গণতন্ত্র নেই। তাহলে সংসদ বিচারকদের অভিশংসনের দায়িত্ব নেয় কীভাবে?’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এখন বিচারকদের কতটুকু স্বাধীনতা আছে, সেটা আমার জানা নাই। আর এই সংশোধনীর মাধ্যমে যা ছিল, সেটাও বিকিয়ে দেওয়া হলো। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে পড়েছে। যতদিন এই অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার থাকবে, ততদিন এটা হতেই থাকবে।’ তিনি মনে করেন, সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা যেভাবে তড়িঘড়ি করে বাদ দেওয়া হয়েছে, ঠিক সেইভাবে সরকার ষোড়শ সংশোধনী করছে।
অভিশংসন আইন করার সময় মত নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রীকারওয়ান বাজারের বস্তি উচ্ছেদের বিষয়ে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন না থাকলে সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা হবে। দলীয়করণ সব আমলে ছিল কিন্তু এখন বেড়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের খুব একটা পরিবর্তন করা হচ্ছে না। শুধু বিচারকদের বিরুদ্ধে যদি অসদাচরণ প্রমাণিত হয়, তাহলে সংসদ তাঁকে অপসারণ করতে পারবে।’ তিনি বলেন, সংশোধনী তড়িঘড়ি করে হচ্ছে, এটা যুক্তিসংগত কথা।
একজন দর্শক ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে ভোটারবিহীন নির্বাচন বলায় রেগে যান আবদুল মতিন খসরু। তিনি ওই দর্শকের উদ্দেশে বলেন, ‘পাঁচ বছর পর নির্বাচন হয়। নির্বাচন না হলে অন্য কোনো অগণতান্ত্রিক সরকার চলে আসতো। বিএনপি নির্বাচন বয়কট করল কেন? আমরা তাদের নির্বাচন আসতে বাধা দিয়েছি? এই নির্বাচনকে হাইকোর্ট ভ্যালিড বলেছে। বিএনপির ভাষায় কথা বলবেন না।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালেয়ে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শের বিষয়ে সব আলোচকই কথা বলেন। আবদুল মতিন খসরু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। আর নাসিম আখতার হুসেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শুদ্ধি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন আকবর হোসেন। আর প্রযোজনা করেছেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ।