সিটি নির্বাচনে কারচুপি অভিযোগ বিএনপির

bnprরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ‘ভোট কারচুপি’র ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছে বিএনপি।

বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “সরকারের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী প্রার্থীদের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই গণজোয়ারে ভীত হয়ে সরকার এখন ছলেবলে তাদের পরাজিত করার অপচেষ্টা করছে।”

“আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই,  তাদের পরাজিত করা হলে জনগণ এর দাঁতভাঙা জবাব দেবে। সেখান থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে,” হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আগামী ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

গত এক মাসে রাজধানীতে বিএনপির প্রথম জনসভায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিও জানান।

সরকারের অনেক ‘টালবাহানার’ পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি পায় প্রধান বিরোধী দল। দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এতে অংশ নেয়, যাদের অনেকের হাতে ছিলো তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড।

বক্তব্যের শুরুতে গত ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ‘নিহতদের’ আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ফখরুল।

ওই অভিযানে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে বিরোধী দল দাবি করলেও সরকার বলছে, এতে কেউ নিহত হয়নি। নিহত হলে তা তালিকাও প্রকাশ করতে বিরোধী দলকে বলেছেন মন্ত্রীরা।

সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

‘নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন হতে দেবো না’

দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

“সরকার যতই নির্যাতন করুক, যত খুশি জেলে পাঠাক, অত্যাচার-নিপীড়ন করুক, বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হতে হবে।’’

বিরোধী দলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, “১৯৯৬ সালে দেশে সংসদীয় সরকার ছিলো, তখন আপনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

“আজ আপনিই আবার বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না, সংসদীয় সরকারের অধীনে নির্র্বাচন হবে।’’

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘‘ওই ধরনের নির্বাচন আমরা হতে দেবো না, দেবো না।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ার কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘সরকার তাদের মতো করে প্রশাসন ঢেলে সাজাচ্ছে।

‘‘সরকারকে বলবো,, এত ভয় কেন? আপনারা যদি ভালো কাজ করে থাকেন, নিজেদের ওপর আস্থা থাকে, জনপ্রিয় হয়ে থাকেন, তাহলে সমান সুবিধা সৃষ্টি করে খেলার মাঠ তৈরি করুন।’’

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির মুখপাত্র।

সমাবেশে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা বলেন, “আমাদের এমপি রানু কথা মেনে নিন, চুদুরবুদুর বাদ দিন। নইলে যে ঘটনা ঘটবে, তার দায় শেখ হাসিনাকে নিতে হবে।’’

সোমবার সংসদে বক্তব্যে রেহানা আখতার রানু সরকারকে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তার আঞ্চলিক ভাষায় বলেছিলেন, “নির্দলীয় সরকার নিয়ে কোনো চুদুরবুদুর চইলত ন।”

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ