জোটে ভাঙন ধরেনি : মির্জা ফখরুল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জোটের মধ্যে কোনো ভাঙন ধরেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘২০-দলীয় জোট অটুট-অক্ষুণ আছে। তবে অনেকেই লোভ-প্রলোভন সামলাতে পারে না। সে লোভে দু-একজন যেতেই পারে। জনগণের আন্দোলনে সেটা কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দলের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও জাতীয় সম্মেলন ২০১৪ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কিছু হাইব্রিড নেতা যে ভাষায় কথা বলেন, তা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। বেগম জিয়া কখনো দেশ ছেড়ে পালাবেন না। দেশ ছেড়ে পালানোর অভ্যাস আছে হাসিনার।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বড় গলায় বলেন তিনি বিক্রি হন না। কিন্তু ১৯৮৬ সালে এরশাদের সাজানো নির্বাচনে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। সেদিন তো বিক্রি হয়েছিলেন।’
বিএনপি জোটে ‘অণু-পরমাণু’ নিয়ে টানাটানি
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সংবিধান একটি নির্দিষ্ট দলকে ক্ষমতায় বসানোর সংবিধান। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য এটি প্রযোজ্য হতে পারে না।
এর আগে সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ১০টি দলের সমন্বয়ে ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) নামের নতুন একটি জোট আত্মপ্রকাশ করেছে। বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে আসা পাঁচটি ও নামসর্বস্ব পাঁচটি দলের সমন্বয়ে এনডিএফ গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনডিএফ জোটের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) একাংশের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন। মহাসচিব ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি-আলমগীর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার। এনডিএফ জোটের দলগুলো হলো: এনপিপি, এনডিপি, ইসলামিক পার্টি (রশীদ), মুসলিম লীগ (জোবাইদা কাদের), ন্যাপ ভাসানী (আনোয়ার), লেবার পার্টি (মনি), তৃণমূল ন্যাপ (পারভীন ভাসানী), ভাসানী মঞ্চ (মমতাজ), ইনসাফ পার্টি (শহীদ চৌধুরী) ও জাগদল। এর মধ্যে প্রথম পাঁচটি দল বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে এসেছে।
নতুন এই জোটের উদ্যোক্তা এনপিপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন একসময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে ছিলেন। তিনি গত ২৫ আগস্ট বিএনপি জোট ছাড়েন। তবে তাঁর দলের একাংশ এখনো বিএনপির জোটে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শওকত হোসেন দাবি করেন, তাঁরা এই জোটকে বিএনপি জোটের বিকল্প মনে করছেন না। কিন্তু তাঁরা দেশ পরিচালনা করতে চান। তাঁদের এই জোট নির্বাচনী জোট। তাঁরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবেন। তাঁদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ।
বিএনপি জোট ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে শওকত হোসেন দাবি করেন, একদলীয় স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কারণে কেউ জোট ছেড়েছে। বিএনপির অনেক ভুল ছিল। এসব কারণেও কেউ ছেড়েছে।
শওকত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে খালেদা জিয়া গভীরভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। সে কারণেই তিনি বিভিন্ন এলোমেলো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।’
বিএনপির নেতারা ইতিমধ্যে অভিযোগ করছেন, সরকারের একটি সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় ২০-দলীয় জোট থেকে বিভিন্ন দলকে বের করে নিয়ে আলাদা জোট করা হচ্ছে।
নতুন জোট গঠনে গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শওকত হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কিছু আমার জানা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে এনডিএফের ঘোষণাপত্র ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের মহাসচিব আলমগীর মজুমদার। এ সময় জোটের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।