সমুদ্রসীমায় উড়বে মার্কিন টহল বিমান
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, চট্টগ্রামঃ প্রথমবারের মতো মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিক টহল বিমান ‘পি-৮ পসেইডন’ টহল দেবে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাসংলগ্ন এলাকায়। মার্কিন বিমানটির সঙ্গে টহল দেবে জার্মানি থেকে সম্প্রতি কেনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর টহল বিমান ‘ডরনিয়ের-২২৮’। দুই দেশের নৌবাহিনীর যৌথ অনুশীলনে ‘ক্যারাট’-এ বিমান দুটি উড়বে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার ওপরে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নৌ ঘাঁটি ঈসা খাঁতে বাংলাদেশ ও মার্কিন নৌবাহিনীর যৌথ অনুশীলন ‘ক্যারাট’ (কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেইনিং) উদ্বোধন করতে গিয়ে এ তথ্য জানান টাস্ক ফোর্স-৭৩ এর কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল চার্লস উইলিয়ামস। ক্যারাটের কার্যক্রম আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আখতার হাবিব এবং বিএন ফ্লোটিলার কমোডর কমান্ডিং কমোডর খালেদ ইকবাল বক্তৃতা করেন।
মার্কিন সপ্তম নৌবহরের দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা সহযোগিতাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিয়ার এডমিরাল চার্লস উইলিয়ামস মনে করেন, প্রথমবারের মতো দুই নৌবাহিনীর বিমানের এ ধরনের টহল সমুদ্রসীমার পরিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে।
দুই দেশের নৌবাহিনীর যৌথ অনুশীলনে ‘পি-৮ পসেইডন’ এবং ‘ডরনিয়ের-২২৮’ ছাড়াও ‘বিএনএস সমুদ্র জয়’এর অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া হ্যামিলটন ক্লাস কাটারটি (সমুদ্রজয়-এর পূর্ববর্তী নাম) এবার প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে বার্ষিক এ অনুশীলনে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসেই বাংলাদেশের জলসীমার একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) টহল দিচ্ছে ‘বিএনএস সমুদ্র জয়’।
দুই দেশের মধ্যে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত এবারের ক্যারাটে মার্কিন নৌবাহিনীর ডুবুরি এবং বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড সলভেজ ইউনিটের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী সমুদ্র এলাকায় অনুশীলনে অংশ নেবে। অনুশীলনে যুক্ত থাকবে ছোটখাটো লড়াইয়ের প্রস্তুতি, ছোট নৌকার রক্ষণাবেক্ষণ ও তা গুঁড়িয়ে দেওয়ার কৌশল, সমুদ্র জরিপ, ডুবুরিদের চিকিত্সা ও উদ্ধার কাজ।
এবারের যৌথ অনুশীলনে সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের নৌবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আইন ও স্বাস্থ্যসেবাসংক্রান্ত সেমিনারে নিজেদের সেরা অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময় করবেন।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সামর্থ্য জোরদার করাই ক্যারাট নামের যৌথ এ অনুশীলনের মূল লক্ষ্য। দস্যুতা, চোরাচালানসহ সামুদ্রিক নিরাপত্তার হুমকি মোকাবিলা এবং দুর্যোগে সহায়তা বাড়াতে গত ২০ বছর ধরে ক্যারাটের কার্যক্রম পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০১১ সাল থেকে যৌথ অনুশীলনে অংশ নিচ্ছে।
বর্তমানে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ব্রুনেই, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া ও পূর্ব-তিমুরসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৯টি দেশে যুক্তরাষ্ট্র এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।