শূন্য পদে নিয়োগে মন্ত্রিসভার নির্দেশ উপেক্ষিত
আনোয়ার আজমী, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিসভার নির্দেশ উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী পদ সৃজন ও শূন্য পদে নিয়োগ ত্বরান্বিত করতে মন্ত্রিসভার নির্দেশ থাকলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এ সংক্রান্ত তথ্য-সুপারিশ দিতে ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহন করেছে খোদ মন্ত্রণালয়গুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্বরান্বিত করতে মন্ত্রিসভার নির্দেশ থাকার পরও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মন্ত্রিসভার নির্দেশের পর জনপ্রশাসন মান্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত তথ্য-সুপারিশ দিতে তাগিদ দিলেও মন্ত্রণালয়গুলো এ বিষয়ে ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহন করেছে। বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ২ লাখ ২৮ হাজার ২৫৬টি পদ শূন্য রয়েছে বলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক জানিয়েছেন ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজন অনুযায়ী পদ সৃজন ও শূন্য পদে নিয়োগের বিষয়ে দু’দুবার তাগিদপত্র দিয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে। তার পরও এ বিষয়ে গতি আসেনি। আর এ কারনে গত ২২ সেপ্টেম্বর সরকারের পদ সৃজন ও শূন্য পদে নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির অনুষ্ঠিত সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
বেকারদের কর্মসংস্থান, সরকারের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রয়োজন অনুযায়ী পদ সৃজন এবং শূন্য পদ পূরণের উপায় খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন ও সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সচিব মিলে মেকানিজম ডেভলপ ও সুপারিশের জন্য বলা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ২৪ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ-সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে সরকার।
কমিটিকে সরকারের শূন্য পদ পূরণ, আবশ্যকীয় নতুন পদ সৃজন ও এ সকল পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, এই কমিটি ১৮ জুন প্রথম সভায় বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার পদ সৃজন ও শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা ও তা সমাধানের বিষয়ে নির্ধারিত ছকে ১০ দিনের মধ্যে কমিটির কাছে পাঠাতে নির্দেশ দেয়।
গত ৭ আগস্ট কমিটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে চিঠি দিলেও তাতে আশানরূপ সাড়া পায়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর আবারো জরুরি ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে তথ্য চেয়ে তাগিদ পত্র দেয় কমিটি। চিঠিতে পদ সৃজন সংক্রান্ত প্রস্তাবের পরীক্ষা-নিরীক্ষা/সম্মতি/সুপারিশ প্রদান এবং পদ শূন্য হওয়ার পর থেকে নিয়োগাদেশ জারি পর্যন্ত গড়ে কত দিন লাগে, তা জানতে চাওয়া হয়। এতেও আশানুরুপ সারা মেলেনি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে।
মন্ত্রিপরিষদ-সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞাকে এ বিষয়ে এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘দ্বিতীয়বার তাগিদ পত্র দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩৬টি মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি আনতে মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার নির্দেশনা রয়েছে।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেকি এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সুপারিশ পর্যালোচনা করে কিভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়, সে বিষয়ে কমিটি সুপারিশ তৈরি করার পর সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
উল্লেখ্য, গত ১০ জুন সংসদে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ২ লাখ ২৮ হাজার ২৫৬টি পদ শূন্য রয়েছে।