সাত খুনের ঘটনায় যা সত্য তাই বলেছি: র‌্যাবের ডিজি

DG Moklace Pic-3আনোয়ার আজমী, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : নারায়নগঞ্জে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ খুনের ঘটনা সম্পর্কে যা সত্য তাই বলা হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের মহাপরিচালক কমিটিকে একথা বলেন। এর আগের দিন (রোববার) মোখলেছুর রহমানকে সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সামনে তাকে উপস্থিত হতে বলা হয়। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে তিনি সচিবালয় প্রবেশ করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি র‌্যাব মহাপরিচালককে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘উনারা যা জানতে চেয়েছেন, আমিও যা সত্য তাই বলেছি। আমি র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। সে কারনে এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা তদন্ত কমিটির বাঞ্ছনীয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘র‌্যাব আইনের পথে থেকে কাজ করে। সত্যের পথে থাকে। সত্যের পথে থেকে কাজ করে।’

অপরদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি প্রধান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লা বলেছেন, নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট শিগগিরই জমা দেয়া হবে। র‌্যাবের ডিজিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা তাকে বলেছি, এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে এলিট ফোর্সকে সতর্ক থাকতে হবে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের ডিজি মোখলেছুর রহমান দাবি করেন, ‘নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনা র‌্যাব সদর দফতর আগে থেকে অবহিত ছিল না। ঘটনা জানার পর বরং র‌্যাব স্ব-উদ্যোগে তদন্ত শুরু করে এবং জড়িতদের সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। সেই সঙ্গে র‌্যাব পুলিশকেও তদন্তে সহায়তা করেছে বলে দাবি করেন মহাপরিচালক।

সাত খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে ঢাকার ডিআইজ মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান, নারায়ণঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তৎকালীন জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, র‌্যাবের  অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান, চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা, নূর হোসেনের সহযোগীসহ পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়নগঞ্জে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং এাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদীতে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ অপহৃত ৬ জনের এবং এর একদিন পর ১ মে বাকি ১ জনের লাশ ভেসে ওঠে।
চাঞ্চল্যকর এই ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন এসময় ভারতে পালিয়ে যায়। গত ১৪ জুন দুই সহযোগীসহ নুর হোসেনকে কলকাতা পুলিশের একটি দল দমদম বিমানবন্দরের পাশের একটি ফ্ল্যাট থেকে আটক করে।

৭ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত র‌্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়নগঞ্জের সাবেক ক্যাম্প প্রধন লে. কমান্ডার এম এম রানা বর্তমানে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন। তারা সকলেই ৭ খুনের এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ