জাতিসংঘ ৬৯তম অধিবেশনে যোগদানসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১০ দিনের সফর শেষে নিউইয়র্ক ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী –
মেহদী আজাদ মাসুম, এবিসিনিউজবিডি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে যোগদানসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১০ দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি লন্ডন থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে শুক্রবার বিস্তারিত জানাবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার এ সফরের অর্জন ও সফলতা তুলে ধরতে আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান। সেখান থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি ব্যক্তিগত সফরে লন্ডনে যান। প্রধানমন্ত্রী গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বিশ্বে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থান ও বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় চরমপন্থিদের উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জাতির সমপ্রীতি বিনষ্টকারী অশুভ শক্তিকে নির্মূল করতে হবে। সুষম উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে শান্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তা বজায় রাখতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। ওইদিনই নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির পাশাপাশি স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ, বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাল ভি মায়নিকোভিচ এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সাথে পৃথক বৈঠক করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগদান করেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের দেয়া সংবর্ধনা ও ভোজসভায়ও অংশ নেন। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন-২০১৪ এর উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগদান করেন এবং শীর্ষ সম্মেলনের ন্যাশনাল এ্যাকশন এন্ড এম্বিশন এনাউন্সমেন্ট অধিবেশনে ভাষণ দেন। তিনি গ্লোবাল এডুকেশন ফার্স্ট ইনিশিয়েটিভের উচ্চপর্যায়ের আলোচনায়ও অংশ নেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সহায়তা করার জন্য নতুন ব্যবসায়ী অংশীদারিত্ব সৃষ্টির আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা অভিযান সংক্রান্ত সম্মেলনেও যোগদান করেন। তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় লন্ডন থেকে সরসারি সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে একঘণ্টার যাত্রাবিরতি করেন তিনি। এ সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার অল্প সময়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটযোগে প্রধানমন্ত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানাতে সেখানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আব্দুস সোবহান শিকদার, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবিসি নিউজ ডটকম/খালেক মন্ডল/২৯-0৯-‘১৪: