পদ্মা সেতুর দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট সম্পূর্ন নয় তবে স্বচ্ছ
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তদন্ত রিপোর্ট সম্পূর্ন নয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী সোমবার তিনি বিশ্বব্যাংকের এই রিপোর্টের জবাব দেবেন। তবে বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট স্বচ্ছ বলে মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রনারয়ের সম্মেলন কক্ষে সোনালি ব্যাংক লিমিটেডের লভাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক্সটার্নাল এক্সপার্ট প্যানেলের চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হয়। বিশ্ব ব্যাংকের নয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি জুহানেস জাট এই রিপোর্ট জমা দেন।
বিশ্ব ব্যাংকের বিশেষজ্ঞরা ঠিক কোন কোন বিষয় তুলে এনেছেন তা বিস্তারিত এড়িয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যে সুপারিশ করেছে আমি সেগুলো দেখেছি। আমি তাদের অনুরোধ করব, তাদের রিপোর্ট এবং আমার জবাব যেন তারা বিশ্ব ব্যাংকের ওযেবসাইটে প্রকাশ করে।’
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন নিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদনে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের নাম নেই- এটাই তাদের প্রধান আপত্তি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দুর্ণীতির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ঋন জালিয়াতীর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নাম আমরা আগেই প্রকাশ করেছি। তবে বর্তমান সরকারের সময়ে জালিয়াতী খুব বেশি একটা হয়নি।
উল্লেক্য, ২৯১ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করেছিল বিশ্ব ব্যাংক। তবে প্রকল্পের পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠায় সেই চুক্তি ঝুলে যায়।
ওই অভিযোগের তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর লুই গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দল দুই দফা বাংলাদেশ সফর করে। ওই দলের অন্য দুই সদস্য হলেন- হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং এবং যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান।
সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দুদকের করা একটি মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন। সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাতজনকে আসামি করে দায়ের ওই মামলায় সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন বা সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর নাম এলেও তাদের আসামি করা হয়নি।
বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে এ প্রকল্পে ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছে।