লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রীসভা থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত
মনির হোসেন মিন্টু, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : অবশেষে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বিতর্কিত ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিককে বহিস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহাবুবুল আলম শাকিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার লতিফ সিদ্দিকী নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক টাঙ্গাইল সমিতির দেয়া সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পবিত্র হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। আর সেকারনেই তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিস্কার করা হয় বলে জানা গেছে।
সম্ভর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ ও তাবলিগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী।’ তিনি বলেন, ‘এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদেও কোনো কাম নাই। এদেও কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘এভারেজে যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায়; প্রত্যেকের পাঁচ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।’
তাবলিগ জামাতের সমালোচনা করে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘তাবলিগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদেও তো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়ি-ঘোড়া তারা বন্ধ কওে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন? জয় ভাই কে? জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও কেউ নন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা টকশো’তে যায়, তারা টক ম্যান। নিজেদেও কোনো কাজ না থাকায় ক্যামেরার সামনে গিয়ে তারা বিড়বিড় করে।’ গালি দিয়ে বলেন, ‘চু… ভাইদের আর কোনো কাজ নেই।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বারবার উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন মন্ত্রী।
ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হজ সম্পর্কে এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পর্কে বিরুপ বক্তব্য দেওয়ায় সভাস্থলেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করলে এক পর্যায়ে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
লতিফ সিদ্দিকীর এই বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোট লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও প্রকাশ্যে তওবা করার পাশাপাশি তাকে মন্ত্রিষভা থেকে বহিস্কারের আহবান জানান।