লতিফের বিচার দাবির মানববন্ধনে পুলিশের গুলি

Jossore Police যশোর পুলিশসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, যশোরঃ আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আজ বুধবার বিকেলে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিএনপির মানববন্ধনে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এ সময় যুবদলের এক নেতা বুকে গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া পুলিশের এক সদস্য এবং এক শিক্ষকও রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যশোর সদর উপজেলার উপশহর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনের (২৩) বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পুলিশ গুলি করেছে। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আহত অপর দুজন হলেন পুলিশ লাইনে কর্মরত কনস্টেবল মতিয়ার রহমান (৩০) ও পুলেরহাট এলাকার কিন্ডারগার্ডেন স্কুল এডাস ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক (৩৭)। তাঁদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হকসহ দলটির ১০ নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে বলেন, যুবদল নেতা কামালের বুকের বাঁ-পাশে একটি গুলি লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ সদস্যের ডান হাত ও অপরজনের মাথা, ঘাড়, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। তিনজনের দেহে অস্ত্রোপচার চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, বিকেল চারটার দিকে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন শুরু হয়। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে বলে। পুলিশি বাধা সত্ত্বেও কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে ওলামা দলের দুই কর্মীকে আটক করে। এতে মানববন্ধনে মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ মানববন্ধন থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হককে আটক করে। তখন দলের কর্মীরা পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে ও ২০-৩০টি গুলি ছোড়ে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমদাদুল হক বলেন, ‘পুলেরহাট স্কুল থেকে ইজিবাইকে চড়ে শহরের দিকে আসার পথে প্রেসক্লাবের সামনে পৌঁছালে বিকট শব্দ শুনে দৌড়াতে থাকি। পরে দেখি মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে। আর কিছু বলতে পারি না।’

জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল হুদা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বর্বর হামলা চালিয়েছে। কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশ বিএনপির মিছিলে গুলি চালিয়েছে। শামসুল হুদা দাবি করেন, পুলিশ যুবদল নেতা কামালকে ধরে নিয়ে বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেছে।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) কে এম আরিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রথমে বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ শটগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। কাউকে ধরে নিয়ে গুলি করা হয়নি বলেও তিনি জানান।

এদিকে সন্ধ্যায় বিএনপির নগর কমিটির সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম বলেন, পুলিশি হামলার তাঁদের ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তারের ভয়ে তাঁরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক, সহসম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, জেলা ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ১০ জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে তিনি জানান।

এ ঘটনার পর থেকে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে শহরে পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ