খালি হাতে ফিরলেন তোবার শ্রমিকেরা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ অবশেষে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হলো তোবার শ্রমিকদের। ঈদের আগে আশা ছিল, পাওনা বেতনসহ বোনাস পাবেন তাঁরা। অবরোধ, ঘেরাও, বিক্ষোভ, আলটিমেটাম কোনো কিছুতেই কাজ হলো না শেষ পর্যন্ত।
তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, তিনি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে পারবেন না। পাওনা পরিশোধের কোনো সুযোগ নেই।
আজ শনিবার বেলা একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বেতন-বোনাসের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বিজিএমইএ ভবন ঘেরাও করে রাখেন শ্রমিকেরা।
সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা না দিয়ে বিজিএমইএ ও সরকার প্রমাণ করল শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কোনো দাম নেই। বেতন দেওয়ার নাম করে শ্রমিকদের ডেকে এনে প্রতারণা করা হয়েছে। এর ফলাফল ভালো হবে না।’ ঈদের পর ১৫ অক্টোবর বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
মোশরেফা মিশু বলেন, ‘ক্ষোভের আগুন নিয়ে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। তাঁদের পাওনা পরিশোধ না করলে শ্রমিকদের ক্ষোভের আগুনে সবাইকে পুড়তে হবে।’
এর আগে বেলা ১১টার সময় মোশরেফা মিশুর নেতৃত্বে ১৫০ জনের বেশি শ্রমিক বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিমের বনানীর বাসা ঘেরাও করে রাখেন। সেখান থেকে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের ব্যাপারে বিজিএমইএতে যেতে বলা হয়। বেলা একটার সময় সেখান থেকে শ্রমিকেরা বিজিএমইএ ভবনে গিয়ে জানতে পারেন, বিজিএমইএর সভাপতি নেই। তারপর বিকেল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন তাঁরা।
তোবা গ্রুপের বুকসান কারখানার শ্রমিক শামীমা আক্তার বলেন, ‘আশা ছিল আজকে টাকা পাব। টাকা না পাওয়ায় ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হবে না।’
ঈদ করার চেয়েও শ্রমিকদের এখন সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভবিষ্যৎ চাকরির চিন্তা। আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাকরির জন্য তাঁরা অন্য কারখানায় যোগাযোগ করেছেন। তবে তোবা নাম শুনলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘তিন মাসের বেশি সময় ধরে তোবার কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে আছে। চালু থাকা কারখানার বেতন দিতে যেখানে মালিকদের সমস্যায় পড়তে হয়, সেখানে এতদিন বন্ধ কারখানার বেতন দেওয়া খুব কঠিন। তবুও তোবার মালিক দেলোয়ারকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে বলেছি।’
যোগাযোগ করা হলে তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখন আমার কাছে কোনো টাকা নেই। চাইলেও টাকা শোধ করার কোনো সুযোগ নাই। ইনস্যুরেন্সের ১৮ কোটি টাকা পেলে আমি পাওনা পরিশোধ করতে পারতাম।’