শৌচাগার পরিষ্কার করছেন ব্রেহমে!
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আন্দ্রেস ব্রেহমেকে মনে আছে? সেই জার্মান ফুটবলার, যাঁর পেনাল্টি গোলে ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল সেই সময়কার পশ্চিম জার্মানি। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার আর লোথার ম্যাথাউসের সেই দুর্ধর্ষ জার্মান দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ব্রেহমেকে ভুলে যাওয়াটা বোধ হয় একটু কঠিনই। বায়ার্ন মিউনিখ আর ইন্টার মিলানের হয়ে দীর্ঘদিন পেশাদার ফুটবল জগৎ দাপিয়ে বেড়ানো এই ফুটবলার এখন সবকিছু হারিয়ে দেউলিয়া। ভাবা যায়, দুবেলা দুমুঠো অন্নের জন্য এই তারকাকে এখন পরিষ্কার করতে হচ্ছে বাথরুম!
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, একজন বিশ্বকাপজয়ী জার্মান ফুটবলারকে খাবার জোটাতে বেছে নিতে হয়েছে এমন জীবন। এক যুগ আগে ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার পর তিনি পড়ে গেছেন কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির মধ্যে। এই মুহূর্তে তিনি নাকি ডুবে আছেন দুই লাখ ৫০ হাজার ডলারের ঋণে। ব্যবসায়ে মার খেয়েই নাকি তাঁর এই অবস্থা। চাকরি-বাকরির চেষ্টা করে তা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর জীবন।
ব্রেহমেকে বাথরুম পরিষ্কারের কাজটা দিয়েছেন অলিভার স্ট্রাউব নামের এক ফুটবলার। খেলোয়াড়ি জীবনে ব্রেহমের অধীনে খেলা এই স্ট্রাউব তাঁকে কাজ দিয়েছেন নিজের প্রতিষ্ঠানেই। স্ট্রাউব এই মুহূর্তে একটি পরিচ্ছন্ন-সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।
ব্রেহমের মতো একজন ফুটবলারকে কীভাবে এমন কাজ দিতে পারলেন, এই প্রশ্নের জবাবে কিছুটা উদ্ধতই শুনিয়েছে স্ট্রাউবের কণ্ঠ, ‘আমি তাঁকে সাহায্য করেছি। কেউ যখন এগিয়ে আসেনি, তখন আমিই এসেছি। আমি ব্রেহমেকে এই কাজটি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছি জীবনটা আসলে কেমন। হ্যাঁ, এটাকেই আমার সাহায্য বলতে পারেন।’
অর্থনৈতিক কারণেই জার্মান ফুটবলের বলয় থেকে নিজেকে গুটিয়েই রেখেছিলেন ব্রেহমে। নব্বইয়ের বিশ্বকাপজয়ী কোনো সতীর্থের সঙ্গেই তাঁর কোনো যোগাযোগ ছিল না। যোগাযোগ ছিল না সেই দলের কোচ ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের সঙ্গেও। তাঁর এই দুরবস্থার কথা চাউর হওয়ার পর রীতিমতো হতবাক তাঁরা। বেকেনবাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ব্রেহমেকে এই অবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসার, ‘আমি হতবাক। ভাবতেও পারিনি ব্রেহমেকে এই অবস্থায় দেখব। জার্মান ফুটবলের ইতিহাসের অন্যতম এই নায়ককে কী আমরা এই অবস্থায় দেখব ভেবেছিলাম। সে আমাদের একটি বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছে। জার্মান ফুটবলে তাঁর রয়েছে অনন্য অবদান। আমাদের সবারই উচিত তাঁর এই অবস্থায় আন্তরিকতার সঙ্গেই এগিয়ে আসা।’
বেকেনবাওয়ার কথা দিয়েছেন, যেকোনো মূল্যেই ব্রেহমেকে দেউলিয়াত্ব থেকে বের করে নিয়ে আসবেন। তাঁকে খুঁজে দেবেন মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার পথ।