পাকিস্তানের বড় হার
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ক্রিকেটে কন্ডিশন নিয়ে কথাবার্তার অন্ত নেই। কিন্তু দলগত পারফরম্যান্সে যে অনেক সময় কঠিন কন্ডিশনকেও পায়ের তলায় নামিয়ে নিয়ে আসা যায়, কাল শারজায় সেটাই যেন প্রমাণ করলো অস্ট্রেলিয়া। আরব আমিরাতের কন্ডিশন যেখানে ‘আবহমানকাল’ থেকেই পাকিস্তানিদের সহায়ক, সেখানে কাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেখা গেল উল্টোচিত্র। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান-বোলাররাই যেন শারজায় কন্ডিশনকে ব্যবহার করলেন সুচারুরূপে, আর তাতেই পুরস্কারটা তারা পেয়ে গেলেন হাতে হাতেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই বিশাল জয় সঙ্গী হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। পাকিস্তান কাল হেরেছে ৯৩ রানের মোটামুটি বড় ব্যবধানেই।
স্টিভেন স্মিথকে অস্ট্রেলিয়া দলে নেওয়া হয়েছিল টেস্টের কথা বিবেচনা করেই। ওয়ানডে দলে গতকাল তাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সেই প্রশ্নের উত্তরটা তিনি দিয়েছেন তাঁর ব্যাট দিয়েই। নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটা তিনি করেছেন উৎকর্ষের সঙ্গেই। স্মিথের কল্যাণেই অস্ট্রেলিয়া স্কোরবোর্ডে যে সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল, সেটাই দিন শেষে যথেষ্ট প্রমাণিত হয়েছে। তবে স্কোর যথেষ্ট প্রমাণে মিচেল জনসন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও নাথান লায়নের ভূমিকাগুলোও ছিল দারুণ। এই তিন বোলার মাত্র ৮৬ রানের বিনিময়ে নিজেদের মধ্যে সাত উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে রীতিমতো খুনই করে দেন পাকিস্তানি ব্যাটিংকে।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া স্কোরবোর্ডে তোলে ২৫৫ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া অবশ্য অলআউট হয়নি। আট উইকেট হারিয়ে করা এই রান যথেষ্ট কি না, সেই প্রশ্ন যখন চারদিকে, ঠিক তখনই পাকিস্তানি ব্যাটিংয়ের চিরাচরিত ভঙ্গুর দশার প্রদর্শনী ঘটে শারজা স্টেডিয়ামে। উমর আকমলের ৪৬ আর সরফরাজ আহমেদের ৩৪ রান না হলে স্কোরকার্ডের অবস্থা যে কী হতো, সেটা বলাই বাহুল্য। শেষের দিকে অভিষিক্ত জুলফিকার বাবর ও মোহাম্মদ ইরফানের দুটি দুই অঙ্কে পৌঁছানো ইনিংস কোনো মতে যেন মান বাঁচিয়েছে পাকিস্তানের। ২৫৬ রান তাড়া করতে নেমে আগেই পরাভব মেনে নিয়ে পাকিস্তান তাদের স্কোরটাকে শেষ পর্যন্ত নিতে পেরেছে ১৬২-তে।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ১০১ রান। তিনিই গতকালের ম্যাচে একমাত্র ব্যাটসম্যান, যিনি নিজের রানটাকে পঞ্চাশের ওপরে নিতে পেরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে—৪৩। এ ছাড়া হাডিন ২৩, ম্যাক্সওয়েল ২১ , জনসন ২১ ও বেইলি ১৮ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। পেসার ওয়াহাব রিয়াজ নেন ২ উইকেট। এ ছাড়া জুলফিকার বাবর, ফাওয়াদ আলম ও মোহাম্মদ ইরফান প্রত্যেকেই নেন একটি করে উইকেট।
২৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে ছিল পাকিস্তানের ব্যাটিং। পাকিস্তানের ইনিংসের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ৫৯/১ থেকে হঠাৎ করেই স্কোরবোর্ডটা ৫৯/৩ হয়ে যাওয়াটা। ১৩তম ওভারে নাথান লায়ন দুটি উইকেট নিয়ে গভীর সংকটে ফেলে দেন পাকিস্তানি ব্যাটিংকে। এই ধাক্কা ইনিংসের শেষ অবধি আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে মিচেল জনস (৩/২৪), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২/২৯) আর নাথান লায়ন (২/৩৩) ছিলেন সফলতম তিন বোলার। এ ছাড়া কেন রিচার্ডসন, সিয়ান অ্যাবট নেন একটি করে উইকেট।