অভিশাপ থেকে মুক্তি পেলেন কোহলি !
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ঢাকা শহরটার ওপর বিরাট কোহলি বিরাট খাপ্পা হয়ে থাকতে পারেন। ৮২, ১৩৬ ও ৪৮—টানা তিনটা দুর্দান্ত ইনিংস খেলে এসে গত মার্চে ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছিলেন। সেই ম্যাচে করলেন ৫ রান। কোহলি কি জানতেন, তাঁর দুর্দশার এই শুরু!
যে কোহলি মাঠে নামা মানে আরেকটি দুর্দান্ত ইনিংস, যে কোহলি দ্রুততম সময়ে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান পূর্ণ করার ভিভ রিচার্ডসের রেকর্ডের পাশে নাম লিখিয়েছিলেন, যে কোহলি টেন্ডুলকারের অন্তত ওয়ানডের সবগুলো রেকর্ড ভেঙে দেবেন বলে নিশ্চিত বাজি ধরা হচ্ছিল; হ্যাঁ সেই বিরাট কোহলিই বিরাট এক শূন্যতার ভেতর দিয়ে হাঁটলেন। আট মাস পর ওয়ানডেতে ফিফটির দেখা পেলেন। শুধু কি ওয়ানডে, এই আট মাসে টেস্টেও কোনো ফিফটির দেখা তিনি পাননি!
ঢাকা যেন তাঁর রানের খাতা পুরো ফাঁকা করার এই অভিশাপ দিয়েছিল তাঁকে। ঢাকার সেই ৫ রানের ইনিংসটা ধরে গত আট মাসে ওয়ানডেতে আজকের আগ পর্যন্ত সাত ইনিংস মিলিয়ে তাঁর রান ছিল ১০৮! ওয়ানডেতে তাঁর ব্যাটিং গড় যেখানে ৫১-এর ওপরে, সেখানে এই সময়টায় গড় ছিল ১৮! টেস্টে ১০ ইনিংসে করেছেন ১৩৪ রান। গড় ১৩.৪!
এ সময় টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য বেশ রান পাচ্ছিলেন। কিন্তু টেস্ট-ওয়ানডের ব্যর্থতায় সেই সুখ তো কর্পূর। উপরি ঘা হয়ে এসেছিল আনুশকা শর্মার সঙ্গে তাঁর প্রেম, একসঙ্গে হোটেলে রাত্রিযাপন নিয়ে কদর্য আলোচনাও।
কোহলি জানতেন, দুঃসময় সব খেলোয়াড়েরই সঙ্গী হয়। কাউকে বেশি ভালো লাগে বলে সঙ্গটা একটু দীর্ঘ সময়েই হয়ে যায়। সুদিন আসবেই। ব্যর্থতার মেঘ ফুঁড়ে সুদিনের সেই সূর্যটাকে নিয়ে আসার কম নিমগ্ন প্রার্থনা তিনি করেননি। গতকাল ভারতীয় দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিনেও সক্কালবেলাতে তিন ঘণ্টা চলল নিবিড় অনুশীলন। সেখানেই শেষ হয়ে যায়নি। হোটেল থেকে ফোন করেছেন ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মাকেও।
আজকের ম্যাচটা হচ্ছে দিল্লিতে। দিল্লি তাঁর নিজের শহর। আর এই শহরে রানে ফিরতে তাই ভীষণই মরিয়া ছিলেন কোহিল। আগের দিন গুরু রাজকুমার আশ্বস্ত করেছিলেন, ‘ওর টেকনিকে কোনো ভুল নেই। সবচেয়ে বড় কথা, নেটে অসম্ভব পরিশ্রম করছে। যেকোনো দিন বড় রান করে দেবে।’
গুরুর কথাটা পরদিনই ফলে গেল। ৭৮ বলে ৬২ রান করে আউট হলেন। তাঁর মতো স্ট্রোকমেকার মেরেছেন মাত্র পাঁচটি চার। এর তিনটিই মেরেছেন ইনিংসের শুরুর দিকে, টানা তিন বলে। ইনিংসের প্রথম ১১ বলে তিনটা চার, পরের ৬৭ বলে চার মাত্র দুটো। কোহলির মরণপণ প্রতিজ্ঞার কথা কি আরও খুলে বলতে হবে?