লিমনের ওপর হামলার স্বাধীন তদন্ত চায় এইচআরডব্লিউ
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ঝালকাঠির রাজাপুরের লিমন হোসেনকে গুলি করে পঙ্গু করার ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত ও র্যাবের দায়ী সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাহিউম্যান রাইটস ওয়াচ(এইচআরডব্লিউ)।
গতকাল সোমবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ অবশেষে লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করেছে। তবে তাঁর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, র্যাবের যে সদস্য লিমনকে গুলি করেছেন এবং যাঁরা লিমনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে বিচারকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর ইউনিয়নের সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে ‘র্যাবের নিষ্ঠুরতার’ শিকার হন দরিদ্র পরিবারের কলেজপড়ুয়া সন্তান লিমন। র্যাবের সদস্যরা তাঁর পায়ে গুলি করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে র্যাব। অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২৫ মার্চ তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ২৭ মার্চ চিকিৎসকেরা লিমনের জীবন বাঁচাতে তাঁর বাঁ পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে বাদ দেন।
লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য্য জানান, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ র্যাবের গুলিতে পা হারান ঝালকাঠির রাজাপুরের কলেজছাত্র লিমন হোসেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর। এ ঘটনার পর বরিশালে র্যাব-৮–এর তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে এবং সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করেন। রাজাপুর থানার পুলিশ ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল অস্ত্র মামলায় এবং ২০১২ সালের ৮ জুলাই সরকারি কাজে বাধাদানের মামলায় লিমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
২০১৩ সালের ৯ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা দুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ওই বছরের ২৯ জুলাই অস্ত্র মামলা এবং চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর সরকারি কাজে বাধাদানের মামলা থেকে অব্যাহতি পান লিমন।
পায়ে হেঁটেই এলেন লিমন
২০১১ সালে ১৬ বছর বয়সী লিমন হোসেনর ওপর হামলার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে সরকারের নির্দেশ দেওয়া উচিত বলে মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দায়ী র্যাব সদস্যদের বিচারের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অবশেষে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করেছে কতৃর্পক্ষ। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।