গায়েহলুদ হলো, পরশু বিয়ে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ‘নির্ধারিত বয়সে বিয়ে করলে যা হতো (যে উৎসাহ থাকত), আগে থেকে এখন দ্বিগুণ উৎসাহ পাচ্ছি। প্রতিদিন আমাকে ফোনে ভক্ত ও কর্মীরা উৎসাহ দিচ্ছে। দেশের মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, সুধীসমাজ ও সাংবাদিকেরা এ বিয়ে নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রকাশ করছে। প্রতিদিন সকলের কাছ থেকে উৎসাহ পাই। সকলের ভালোবাসা ও স্নেহের নিদর্শনস্বরূপ এ গায়েহলুদ।’
নিজের গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক।
আজ বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর ফার্মগেটে খামারবাড়ি কৃষি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে রেলপথমন্ত্রীর গায়েহলুদের অনুষ্ঠান হয়। একই স্থানে কনে হনুফা আক্তার ওরফে রিক্তারও গায়েহলুদ হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারদলীয় সাংসদ, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতা-কর্মী, মন্ত্রী ও কনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্তত ১০ জন রাজনীতিবিদ ও সরকারদলীয় কর্মী বলেন, আজ দুপুর ১২টায় গায়েহলুদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। ওই অনুষ্ঠানের দেখভাল করেন সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ ও অভিনেত্রী তারানা হালিমের নেতৃত্বে একদল নারী সাংসদ। এতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, কনের এলাকা কুমিল্লার চান্দিনা আসনের সাংসদ আলী আশরাফ, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ আবদুল মালেকসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম খান বলেন, ‘জমজমাট গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য মুরগি, পোলাও, খাসির মাংস, চটপটি ও মিষ্টির ব্যবস্থা ছিল। অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী মহোদয় বেশ ফুরফুরে ছিলেন।’
রেলপথমন্ত্রী বিয়ের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি একজন মুসলমান। একজন মুসলমান হিসেবে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনেই আল্লাহর মেহেরবাণীতে আমি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছি। আমি গতকল্য (গত মঙ্গলবার) আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিয়ে এসেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, “আমি আল্লাহর কাছে তোমার জন্য দোয়া করি। তোমার দাম্পত্য জীবন সুখের হোক।” প্রধানমন্ত্রী আমাকে স্নেহ করেন। আমি তাঁর কর্মী। তিনি আমার সুখের ও শান্তিময় জীবন প্রত্যাশা করেছেন।’
রেলপথমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করি। আমার দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়।’
এদিকে আগামী শুক্রবার দুপুরে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক ৫০০ জন বরযাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মীরাখলা গ্রামে যাবেন। সেখানে বিয়ে সম্পন্ন হবে। এ উপলক্ষে কনের বাড়ি সাজানো হচ্ছে। সেখানে নতুন করে সড়ক ও ঘর মেরামত করা হয়েছে। এ বিয়ে দেখার জন্য আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা মুখিয়ে আছেন।
রেলপথমন্ত্রীর বিয়ের আয়োজনের সমন্বয়ক চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় শুক্রবার বিয়ের পর নববধূকে নিয়ে ঢাকার বেইলি রোডের মন্ত্রীপাড়ার বাসভবনে যাবেন। আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকায় এবং ৬ ডিসেম্বর চৌদ্দগ্রামের গ্রামের বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠান হবে। ইতিমধ্যে সব কয়টি অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র বিতরণ শেষ হয়েছে।’
১৯৪৭ সালের ৩১ মে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বসুয়ারা গ্রামে মো. মুজিবুল হক জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিনি চৌদ্দগ্রাম থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে ১৯৮৫ সালের ২০ মে হনুফা আক্তার ওরফে রিক্তা জন্মগ্রহণ করেন। ২০০১ সালে গল্লাই আবেদা নূর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে রিক্তা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে এলএলবি পাস করেন। বর্তমানে তিনি হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ লিমিটেডের আইন উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন।