কামারুজ্জামানের চূড়ান্ত রায় কাল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের ওপর রায় আগামীকাল সোমবার।
সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম কুদ্দুস জামান আজ রোববার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কাল সকালে কামারুজ্জামানের আপিলের ওপর রায় দেওয়া হবে।
মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের শুনানি ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ আপিল শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি-কেস অ্যায়োটিং ভারডিক্ট) রাখেন। এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
আপিল শুনানিতে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি দাবি করেন, বিচারিক আদালতে যে পাঁচটি অভিযোগে কামারুজ্জামান দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, এর প্রতিটি অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ জন্য আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্য।
কামারুজ্জামানের আইনজীবী এস এম শাহজাহান দাবি করেন, নিজেদের আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই আসামির খালাসের আরজি জানানো হচ্ছে।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
গত বছরের ৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা সাতটির মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে সোহাগপুর ‘বিধবাপল্লী’তে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও গোলাম মোস্তফা হত্যাকাণ্ডের (তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ) দায়ে কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাজার আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া বদিউজ্জামান ও দারাসহ ছয়জনকে হত্যার (প্রথম ও সপ্তম অভিযোগ) দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং একাত্তরে শেরপুর কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল হান্নানের প্রতি অমানবিক আচরণের দায়ে (দ্বিতীয় অভিযোগ) তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ৬ জুন কামারুজ্জামান আপিল করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি। এক বছর পর চলতি বছরের ৫ জুন থেকে আপিল শুনানি শুরু হয়।
একাত্তরে রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ১৩ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, পরে ওই বছরের ২ অক্টোবর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই সময় থেকে তিনি কারাগারে আটক আছেন।