ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা স্বাস্থ্যসচিব স্বেচ্ছা অবসরে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি করে চাকরির মেয়াদ বাড়ানো স্বাস্থ্যসচিব মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞা অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছা অবসরে যেতে বাধ্য হলেন।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাস্থ্যসচিব মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞা অসুস্থ। তাই তিনি স্বেচ্ছা অবসরে যেতে যান। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
সূত্রগুলো বলছে, মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞাকে পদত্যাগ করতে বা স্বেচ্ছা অবসরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসচিব মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞাসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি করে চাকরির মেয়াদ বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে গত ২২ জানুয়ারি ‘চাকরির শেষ সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ার হিড়িক’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে অসদাচরণের অপরাধ করেছেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তাঁর সনদ বাতিল করে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি গত সপ্তাহে এর জবাব দেন। কিন্তু বাকি যাঁদের সনদ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে, তাঁদের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মো. নিয়াজ উদ্দিন মিঞাসহ তিন সচিব ও এক যুগ্ম সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশে ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট বাতিল করে মন্ত্রণালয়। জামুকার বৈঠকে সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হওয়ার নয় দিন পর মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।
সনদ বাতিল হওয়া অন্য কর্মকর্তারা হলেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব এ কে এম আমির হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী (বর্তমানে ওএসডি) এবং একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ওএসডি) আবুল কাসেম তালুকদার।