রোহিঙ্গা ইস্যুতে একত্রে কাজ করা উচিত : রাষ্ট্রপতি

abdul-hamid-sm220130423045117আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধে একটি ফলপ্রসূ উপায় খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। কারণ, এই অনুপ্রবেশ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করছে।
আজ রোববার বেইজিংয়ে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থেইন সেইনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি বলেন, রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে মিয়ানমার শরণার্থীদের অনুপ্রবেশ বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থসামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত ।
বাসসের এক খবরে জানা যায়, এর আগে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (অ্যাপেক) সদস্য হতে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নতুন সদস্যভুক্তির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি অ্যাপেক বিবেচনা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
বেইজিংয়ে অ্যাপেক সিইও শীর্ষ সম্মেলনের এক অধিবেশনে ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অ্যাপেকের সদস্য হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নতুন সদস্য নেওয়ার ওপর থেকে অ্যাপেক তার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের নির্বাহী সচিব শামশাদ আক্তার। এতে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ থেইন সেইন, লাও পিডিআরের প্রেসিডেন্ট চোমালি সায়াসোন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামডি আক্কা মোহা সেনা পাদেই টিহো হুন সেন এবং বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী নেতা ও সিইওরা উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার বাংলাদেশের মতো নন-অ্যাপেক ও অ্যাপেক সদস্য দেশগুলোর টেকসই অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত ‘ফ্রি ট্রেড এরিয়া অব দ্য এশিয়া প্যাসিফিক (এফটিএএপি)’-এর ফলে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের সৃষ্টি হবে, যা এই অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী।

আবদুল হামিদ আরও বলেন, সার্ক ও বিমস্টেকের আওতায় বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর অবকাঠামো ও অর্থনীতি যোগাযোগের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, এর আওতায় বর্তমানে বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর (বিসিআইএম-ইসি) প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ওশেন রিম অ্যাসোসিয়েশনে (আইওআরএ) সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আইওআরএ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্রবিষয়ক খাতে এ অঞ্চলের ভারত, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, ইউএই ও জাপানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হতে আমরা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং দক্ষিণাঞ্চলে তৃতীয় সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। বিশ্বের এ অঞ্চলে সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট এবং একুশ শতকের মেরিটাইম সিল্ক রুট পুনরুজ্জীবনে চীনের প্রেসিডেন্ট ঝি জিমপিং যে উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ তার প্রশংসা করছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ