পদ্মায় সেতু প্রকল্পে ফিরছে না জাইকা

কলকাতা রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দুর্নীতির অভিযোগ এবং অর্থায়ন জটিলতায় দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা পদ্মা সেতু প্রকল্পে আর ফিরবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে জাপানের রাষ্ট্রায়াত্ত ঋণদাতা সংস্থা জাইকা।

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে জটিলতার কারণে সরে গেলেও পদ্মা সেতু প্রকল্পে জাইকা আবার ফিরতে পারে- এমন গুঞ্জনের অবসান ঘটল তানাকার এই কথায়।

গত মাসে নয়া দিল্লিতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বার্ষিক সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাইকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক মাসাকাত নাকাহার আভাস দেন, বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিলে জাইকা পদ্মা প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

ওই বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী মুহিতও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “তাদের ফিরে আসার অনুরোধ জানাব। আমার আশা, তারা ফিরে আসবে।”

তবে ভারত সফররত জাইকা প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, পদ্মায় ফেরার কথা তারা ভাবছেন না।

“বাংলাদেশের এই প্রকল্পে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার যে পরিকল্পনা ছিল তা ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। আমরা আর এ প্রকল্পের সঙ্গে নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকার বাইরের কারো আর্থিক সহযোগিতা না নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নেই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে।”

বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে ২৯১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যাতে বিশ্ব ব্যাংকের ১২০ কোটি এবং জাইকার ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল।দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে চলতি বছরের শুরুতে এই প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদ করে বাংলাদেশ। ফলে জাইকা এবং অন্য দুই ঋণদাতা সংস্থা এডিবি ও আইডিবিও পদ্মা প্রকল্প থেকে সরে যায়।

সে সময় জাইকার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “বর্তমান কাঠামোয় আমাদের পেক্ষে আর এ প্রকল্পের সহ অর্থদাতা থাকা সম্ভব নয়। নীতির ক্ষেত্রে আপসহীন থাকতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।”

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়। আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে এ প্রকল্পে ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দও রেখেছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণে আগামী ৩০ জুন ৯ হাজার ১৭২ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হবে।