শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

Islamic University Monogram Logoসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কুষ্টিয়াঃ পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হল ছাড়তে গিয়ে আজ সোমবার হয়রানির শিকার হয়েছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের মারধর করে টাকা, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরিবহনশ্রমিকেরা শহরের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে ঢুকেও ভাঙচুর চালাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিভাগের ছাত্র তাহমিদ হাসানের অভিযোগ, ‘গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় কুষ্টিয়ার পরিবহনশ্রমিকেরা শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে। এ ছাড়াও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পেলেই মারধর করছে তারা।’

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন বলে আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীরা তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও রাস্তায় হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
গতকাল বাস চাপায় ছাত্র নিহত হওয়ার পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আজ সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে গতকাল ৩৫টি গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে কুষ্টিয়ায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের মধ্যে হল ছাড়তে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক এক ছাত্র জানান, তাঁর বন্ধু সকালে নছিমনে করে ঝিনাইদহে রওনা দেন। পথে গাড়াগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁকে মারধর করে মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয়।
আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তাঁরা ঝিনাইদহের মদনডাঙা, চড়িয়ারবিল এবং কুষ্টিয়ার মধুপুর ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা মারধর করে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হলের একজন আবাসিক ছাত্র বলেন, ‘একদিকে হল ত্যাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলটিমেটাম, অন্যদিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতির পরিবহন ধর্মঘট। এমতাবস্থায় আমরা না পারছি হল ছাড়তে, না পারছি বাড়ি যেতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, হয় তারা হল খোলা রাখুক অথবা বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে ধর্মঘট শিথিল করার ব্যবস্থা করুক।’
খালেদা জিয়া হলের আবাসিক এক ছাত্রী বলেন, ‘রাস্তায় তো আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। রাস্তায় আমার কয়েকজন বন্ধু হয়রানির শিকার হয়েছে, এমন সংবাদের পর আমরা হল ত্যাগের সাহস পাচ্ছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুল হাকিম সরকার বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘট চলা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবে। আমরা পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। আশা করি তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবেন। ধর্মঘট প্রত্যাহার করামাত্র শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে।’
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র আমার কাছে এসে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং হয়রানি বন্ধের জন্য একটি আবেদন দিয়েছে। এরপর আমি কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেট থেকে চৌড়হাস এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রেখে নজরদারি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ