র্যাবে স্বচ্ছ কর্মকর্তাদের নিয়োগ চান ডিজি
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে র্যাবে ‘স্বচ্ছ’ কর্মকর্তাদের নিয়োগ চান র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) মোখলেছুর রহমান। নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় তদন্তে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) আফতাব উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের কমিটির কাছে এই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত এই তদন্ত কমিটি তাঁদের প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেওয়ার জন্য গত ২৩ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান আজ সোমবার বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে কমিটি হয়েছে। ওই কমিটির কাছে যা বলার বলেছি। এর বাইরে কোনো কিছু বলা ঠিক হবে না।’
প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, তদন্ত কমিটির কাছে র্যাবের মহাপরিচালক নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নিয়ে ওই সময়ে তাঁর পক্ষ থেকে নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। মোখলেছুর রহমান কমিটিকে বলেন, গত ২৭ এপ্রিল ঘটনার কিছু পরই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার স্পর্শকাতর অপহরণের বিষয়ে জানিয়ে অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারে তাঁর সহায়তা চান। তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব-১১-এর অধিনায়ককে (লে. কর্নেল তারেক সাঈদ) ফোন করে অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারের কথা বললে তিনি (অধিনায়ক র্যাব-১১) উদ্ধারের চেষ্টা করছেন বলে জানান।
ডিজি তাঁর বক্তব্যে বলেন, তিনি তাঁর অধীনস্ত কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন। কর্মকর্তারা নির্দেশ অনুযায়ী চেষ্টা চালান এবং তিনি নিজেই বিষয়টি মনিটর করেন। পরদিন র্যাবের এডিজি অপারেশনস (লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান) সকালে ডিজিকে জানান, এ ঘটনায় র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। তথ্যটি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানান বলে ডিজি কমিটিকে বলেছেন।
২৯ এপ্রিল র্যাবের তিনজন সদস্যকে র্যাবের থেকে প্রত্যাহার করে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয় বলে ডিজি উল্লেখ করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁদের গ্রেপ্তার করার কথাও জানান। হাইকোর্টের নির্দেশে আগের তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে কমিটির ওপর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার কথাও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, পুলিশের তদন্তে এবং আসামি গ্রেপ্তারসহ মামলার তদন্তে র্যাব প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, র্যাব সদর দপ্তর থেকে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করার জন্য বলা হয় না। অধীনস্ত কোনো অফিস থেকেও অপরাধীদের তালিকা করে র্যাব সদর দপ্তরে পাঠানো হয় না। তাই অপরাধীদের কোনো তালিকা র্যাব সদর দপ্তরে থাকে না। র্যাব সদর দপ্তরে ডিজির সভাপতিত্বে মাসিক সভায় অধীনস্ত দপ্তরগুলোর কাজ মূল্যায়ন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং এর পরদিন আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। অন্যদিকে চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন এবং এম এম রানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।