প্রধানমন্ত্রী তারেক ও কোকোর বকেয়া ঋণের তথ্য দিলেন

sanghasinaরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ খালেদা জিয়ার দুই ছেলে ও ভাই এবং বিএনপির সাবেক দুই মন্ত্রীসহ দলের একাধিক নেতার ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় হাজার কোটি টাকা বকেয়া ঋণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার জাতীয় সংসদে বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নিলোফার  চৌধুরী মনির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেড, খাম্বা লিমিটেড এবং গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ বিএনপির কয়েকজন নেতার ১৫টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৯৮০ কোটি দুই লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ বকেয়া রয়েছে, যার একটি বিরাট অংশ হলো কুঋণ বা মন্দ ঋণ।”

এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে ড্যান্ডি ডায়িংয়ের বকেয়া ৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যার পুরোটাই মন্দ ঋণ।

ড্যান্ডি ডায়িংয়ের পরিচালকরা হলেন- খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও  আরাফাত রহমান কোকো, ভাই প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দার, তারেকের ব্যবসায়ীক অংশীদার গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, মোজাফফর আহমেদ এবং নাসরীন আহমেদ।

গত ৬ জুন সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপ্যায়ন খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বক্তব্য দেন বিরোধী দলীয় এক সংসদ সদস্য। সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া তার ওই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা হোসেন ওয়াজেদের সম্পত্তির উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলেন।

নিলোফার চৌধুরী মনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বকেয়া সম্পর্কেও জানতে চান।

জবাবের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের বকেয়া ঋণের তথ্য দেন।

শেখ হাসিনা জানান, এবি ব্যাংকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের প্রতিষ্ঠান প্রিকাস্ট লিমিটেডের বকেয়া ঋণ ১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এরও পুরোটাই মন্দ ঋণ। মামুনের আরেক প্রতিষ্ঠান খাম্বা লিমিটেডের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ২৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকার পুরোটাই মন্দ ঋণ।মামুনের ওয়ান স্পিনিং মিলের কাছে প্রাইম ব্যাংকের বকেয়া আট কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬৫ লাখ টাকা বকেয়া আর বাকিটা মন্দ ঋণ। একই কোম্পানির ওয়ান স্পিনিং মিলের কাছে সোনালী ব্যাংকের পাওনা ৫৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যার পুরোটাই মন্দ ঋণ। জনতা ব্যাংকের কাছে ওয়ান স্পিনিংয়ের বকেয়া ২৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।”

এ ছাড়া ওয়ান ডেনিম লিমিটেডের জনতা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক লি., সাউথ ইস্ট এবং সিটি ব্যাংকের কাছে বকেয়া ১৭০ কোটি ৪০ লাখ। এরও পুরোটাই মন্দ ঋণ।

এম এ হাসেমের আম্বার কটন মিলের সোনালী ব্যাংকের কাছে বকেয়া ৩৭৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সন্দেহজনক ঋণ ৪৮ লাখ টাকা, বাকি ৩৭৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বকেয়া ঋণ।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফেস অ্যান্ড ফ্রগলেসের কাছে সোনালী ব্যাংকের বকেয়া ঋণ পাঁচ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রিয়িমার ব্যাংকের কাছে একই ব্যক্তির মিহির গার্মেন্টেসের বকেয়া ২২ লাখ টাকা। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আলফা পেকেজেস (বিডি লিমিটেডের) ঢাকা ব্যাংকের কাছে বকেয়া ঋণ ২৮ লাখ টাকা।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খানের প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে আইএফআইসি ব্যাংকের কাছে বকেয়া আট কোটি ১৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কাছে মোর্শেদ খানের নয়াপাড়া টি কোম্পানির বকেয়া ঋণ ৫৩ লাখ টাকা। প্যাসিফিক মটরসের কাছে এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বকেয়া ঋণ ১২  কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর হোটেল সারিনার ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের কাছে বকেয়া ঋণ ২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সরকারি ব্যাংকগুলোর (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) বকেয়া বাবদ ১৫ হাজার ১১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।”

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ