আকিজ বন্ধ : কর প্রত্যাহার চেয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

akizbiriরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, যশোরঃ কর বাড়ানোয় লোকসানের কারণ দেখিয়ে আকিজ বিড়ি কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর যশোরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে শ্রমিকরা।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারন পুরাতন বাজার এলাকায় বুধবার সকাল ৯টা থেকে কর প্রত্যাহারের দাবিতে বিড়ি শ্রমিকদের এই বিক্ষোভের কারণে যশোর-সাতক্ষীরা ও যশোর-বেনাপোল সড়কে সাড়ে তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমানের আশ্বাসে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে চলে গেলে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজিজ কারখানার ব্যবস্থাপক এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “বাজেটে বিড়ি ও নিম্নমানের সিগারেটের ওপর যে হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে দুটোর দাম প্রায় সমান হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমাদের বিড়ি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়েই আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি।”

এদিকে কারখানা বন্ধ থাকায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক সকাল ৯টার দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে কর প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৬ জুন সংসদে যে বাজেট উপস্থাপন করেন, তাতে চার বছর পর বিড়ির ওপর করের হার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ির ওপর সম্পূরক শুল্কের হার ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। এতে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার প্যাকেটের মূল্য বেড়ে চার টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বেড়ে পাঁচ টাকা ৮০ পয়সা এবং ফিল্টারসহ ২০ শলাকার প্যাকেটের মূল্য চার টাকা ৯৩ পয়সা থেকে বেড়ে ছয় টাকা ৩০ পয়সা হবে।

আকিজ বিড়ি কারখানাটিতে স্থায়ী শ্রমিক তিন হাজার। এছাড়া প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন, যাদের অধিকাংশই নারী।

কারখানার ব্যবস্থাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এতোগুলো মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। সরকারের এটা বিবেচনা করে দেখা উচিৎ।”

কারখানার সামনে শ্রমিকদের জমায়েত থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন যশোর জেলা বিড়ি শ্রমিক সমন্বয় কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান।

বিক্ষোভ চলাকালেই যশোরের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একজন কর্মকতা আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন এবং তাদের দাবির বিষয়টি সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেন।

এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।

যশোর জেলা বিড়ি শ্রমিক সমন্বয় কমিটির সদস্য ও নাভারন বিড়ি শ্রমিক নেতা মো. আলাউদ্দিন বলেন, “ডিসি সাহেব আমাদের কাছ থেকে একটা স্মারকলিপি নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রীকে দেয়ার জন্য। আমার ২৭ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”

বিড়ি কারখানা খোলা হবে কি না জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। কারখানা খোলার বিষয়ে মালিকপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।”

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ