আসাম-ত্রিপুরা-মেঘালয়ে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করছে জেএমবি

Indian Flag ইন্ডিয়ান পতাকাআন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে নিজেদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছে। আসামে গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবির অন্যতম এক সদস্য শাহনুর আলম জিজ্ঞাসাবাদে সেখানকার তদন্ত কর্মকর্তাদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের সাহায্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী জেএমবির আরও ১০ সদস্যকে চিহ্নিত করেছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কয়েকটি সূত্র দ্য আসাম ট্রিবিউনকে জানায়, আসামে জেএমবির নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে অন্তত ১০ জনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সংগঠনটি। জেএমবিতে যোগ দিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ইতিমধ্যে ওই ১০ জনকে আসামের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এখন আসামে জেএমবির নেটওয়ার্ক নিয়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

কিছু তথ্যের ভিত্তিতে সূত্রগুলো জানায়, ২০১২ সালে বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অটোনোমাস ডিসট্রিক্টস (বিটিএডি) অঞ্চলে জাতিগত দাঙ্গার পর থেকে জেএমবি এই অঞ্চলে নিজেদের ঘাঁটি গাড়তে শুরু করে। ওই দাঙ্গায় শতাধিক লোক নিহত হয়। আর জেএমবি এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজ্যজুড়ে নিজেদের ঘাঁটি বাড়াতে থাকে। তারা এই প্রচারণা চালাতে থাকে যে, তাদের মূল লক্ষ্য শুধু মুসলিম সম্প্রদায়কে রক্ষা করাই নয়, নিরীহ মানুষকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়াও তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আসাম ট্রিবিউন বলেছে, এখন এটি প্রতিষ্ঠিত যে, আসাম থেকে বেশ কয়েকজন পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে জেএমবির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে রাজ্যে তাঁদের সংখ্যা কত, তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র দ্য এশিয়ান এজ পত্রিকাকে জানায়, শাহনুর আলম জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানিয়েছেন, উত্তর–পশ্চিমে জেএমবির বিভিন্ন অভিযানের মূল পরিকল্পনাকারী হলেন জহিরুদ্দিন। তিনি একজন বাংলাদেশি।

আসামে শাহনুরকে জেএমবির একজন মূল হোতা উল্লেখ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রটি জানায়, জহিরুদ্দিন বাংলাদেশে জেএমবির সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের কাজটি করে থাকেন। শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার পর থেকে জেএমবির কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি বাড়ালে জহিরুদ্দিন দেশ ছাড়েন। কর্মকর্তাদের কাছে খবর রয়েছে, জহিরুদ্দিন আসামের বারপেতা জেলায় স্থানীয় এক মেয়েকে বিয়ে করে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি তিনি রেশন কার্ড ও ভোটার পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন। জহিরুদ্দিন নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটাতে মেঘালয় ও ত্রিপুরায়ও গেছেন বলে কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য আছে।
তবে আসামে তৃণমূল পর্যায়ের মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছ থেকে জেএমবি তেমন কোনো ধরনের সমর্থন পাচ্ছে না উল্লেখ করে সূত্রটি জানায়, রমজান মাসে কয়েকটি মাহফিলে জহিরুদ্দিন জেএমবির মতাদর্শ প্রচার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শাহনুর ও তাঁর স্ত্রী এসব মাহফিলের আয়োজনে সহায়তা করেছিলেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ