প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকলেন উপাচার্য

Chittagong University logoসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক পক্ষের গুলিতে অপরপক্ষের কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে আজ সোমবার উপাচার্যকে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিএফসি (চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার) ও ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের ৪০-৪২ জন নেতা-কর্মী উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন।

গতকাল রোববার গুলিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ ভিএক্স (ভার্সিটি এক্সপ্রেস) ও সিএফসির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শিক্ষার্থী তাপস সরকার। তাপস সিএফসি পক্ষের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। দুই পক্ষই নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী।

ফুল হাতে পাশাপাশি, এক ঘণ্টা পর খুন 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সিএসফির কয়েকজন কর্মী জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে উপাচার্যের দপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগের সিএফসি পক্ষের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকেও তালা দেন। তাঁদের অভিযোগ, তাপস সরকার নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁরা মামলা করতে গেলে পুলিশ নেয়নি। আসামির তালিকায় প্রক্টরের নাম রাখায় পুলিশ এমনটা করেছে বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া গতকালের ঘটনায় প্রক্টর সিরাজউদৌল্লার সরাসরি মদদ রয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তাই তাঁরা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছেন। পরে তাঁরা উপাচার্যের দপ্তরের প্রবেশমুখের চারটি দরজায় অবস্থান নেন। দপ্তর থেকে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেওয়া হয়নি। বেলা পৌনে দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকেন উপাচার্য। এ সময় ছাত্ররা উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফ ও প্রক্টর সিরাজউদৌল্লার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। ছাত্রলীগের উত্তেজিত কর্মীরা তাঁর দপ্তরে ইটপাথর নিক্ষেপ করেন। এতে দপ্তরের দুটি জানালার কাচ ভেঙে যায়।

অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে সিএফসি ও ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের পক্ষের নেতা শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে চারজন উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সময়ে বিভিন্ন পর্ষদের দায়িত্বশীল শিক্ষক ও পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন। বৈঠক থেকে বের হয়ে শাহাদাত কর্মীদের জানান, আজকের মধ্যে হত্যা মামলা নিতে পুলিশকে চাপ সৃষ্টি এবং প্রক্টর কাল মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগ করবেন বলে উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, হত্যা মামলা নিতে চাপ সৃষ্টি কিংবা প্রক্টরের পদত্যাগের ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। কারণ প্রক্টর তো গুলি করেননি। প্রক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতে। অসম্মানভাবে একজন শিক্ষককে বিদায় করা যায় না। এ ছাড়া প্রক্টর হওয়ার দায়িত্ব কেউ নিতে চায় না। আরেক পক্ষ এই প্রক্টরকে চায়।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইসমাইলের ভাষ্য, এ ঘটনায় হাটহাজারী থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। মামলায় ৬৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের ভিএক্স পক্ষের পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন হলেন আনিস, আশরাফুজ্জামান, রাশেদ হোসেন ও রুবেল। বাকি একজনের নাম জানা যায়নি।
ওসি আরও জানান, গতকাল আটক ২৭ জন থানায় রয়েছেন। আটক আরেকজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ