ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা: এক ধর্ষক গ্রেফতার

limarongporরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, রংপুরঃ রংপুর নগরীর চক বাজার এলাকার এরশাদ নগরে ৭ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী দুই কলেজ ছাত্রের পাশবিকতার  শিকার হওয়ায় লাজ লজ্জায় আর ক্ষোভে অভিমান করে অবশেষে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে পুরো ঘটনা বর্ননা করে আত্মহত্যা করার আগে ৬ পৃষ্টার এক চিঠিতে দায়ি দুই ছাত্রের নাম উল্লেখ করে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে।

এ ঘটনায় পুলিশ ধর্ষক এক কলেজ ছাত্র মুশফিককে গ্রেফতার করেছে। সেই সাথে আত্মহত্যাকারী স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ । পুরো ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায় রংপুর নগরীর চক বাজার এলাকায় অবস্থিত আল্লাহর দান নামে একটি বেসরকারী ছাত্রবাসে বসবাসকারী ছাত্রদের রান্না বান্নার কাজ করতো এরশাদ নগর এলাকার শিউলী বেগম নামে এক হতদরিদ্র মহিলা। আর মা শিউলী বেগমকে  সাহায্য করার জন্য মাঝে মাঝেই সেখানে আসতো স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী। সেখানে বসবাসকারী রংপুর কারমাইকেল কলেজের দুই ছাত্র মুশফিক ও রাজ্জাক স্কুল ছাত্রীটির উপর তাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা প্রায়ই তাকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করতো। গত রোববার মা শিউলী বেগম তার মেয়েকে সেখানে রেখে অন্য বাড়িতে কাজের জন্য যায়। এ সময় কলেজ ছাত্র রাজ্জাক স্কুল ছাত্রীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং অপর কলেজ ছাত্র মুশফিক পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা করে। এ সময় সে কোন রকমে সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে । আসার সময় দুই ধর্ষক কলেজ ছাত্র তাকে এ ব্যাপারে কাউকে জানালে পরিনাম খারাপ হবে বলে হুমকী দেয় এবং টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে বরং শালিষ ডেকে মা সহ পুরো পরিবারকে এক ঘরে করে এলাকা থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে জানায়। লাজ লজ্জায় আর ক্ষোভে অভিমানে স্কুল ছাত্রী পরেরদিন সোমবার সন্ধায়  ঘরের মধ্যে থাকা সিলিং ফ্যানে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যা করার আগে স্কুল ছাত্রী ৬ পৃষ্টার এক চিঠিতে তার উপর পাশাবিক নির্যাতন করা সহ পুরো ঘটনা উল্লেখ করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সেই সাথে আত্মহত্যা করার আগে লেখা চিঠিটিও সীজ করে নিয়ে আসে। চিঠিটি পড়ে পুরো ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। এ বিষয়ে যাতে কোন মামলা রুজু না হয় সে জন্য সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত চলে পুলিশের সাথে নানান দেন দরবার । শেষ পর্যন্ত পুলিশ ধর্ষকদের একজন কলেজ ছাত্র মুশফিককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।

সার্বিক বিষয়ে জানার জন্য কোতওয়ালী থানার ওসি সাহাব উদ্দিন খলিফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান স্কুল ছাত্রীটি আত্মহত্যা করার আগে পুরো ঘটনা বর্ননা করে একটি দীর্ঘ চিঠি লিখে গেছে। ওই চিঠির সুত্র ধরে ধর্ষকদের একজন কলেজ ছাত্র মুশফিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওসি জানান মুল আসামী রাজ্জাককে গ্রেফতার করার চেষ্টা করা হচ্ছেবলে জানান তিনি । ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পুরো মৃত্যুর কারন আর ধর্ষনের বিষয়টি সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানান ওসি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ