জাহাঙ্গীর মনবেদনায় বিশ্রামে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের খোঁজ না মিললেও স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা মনোবেদনা নিয়ে বিশ্রামে রয়েছেন।
আগামী ৬ জুলাই অনুষ্ঠেয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হন জাহাঙ্গীর। তবে তার দল আওয়ামী লীগ ওই পদে নির্বাচনের জন্য সমর্থন দেয় আজমত উল্লাহ খানকে।
দলের এই বিভেদ মেটাতে গত মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দুই প্রার্থীকেই ঢাকায় ডেকে পাঠান।দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রচারে নামা জাহাঙ্গীর রাতের ওই বৈঠকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, যা সাংবাদিকদের জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ।
এরপর থেকে জাহাঙ্গীরকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। গাজীপুর ও উত্তরার দুটি বাড়ি একটিতেও তাকে পাওয়া যায়নি, তার মোবাইল ফোন দুটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
গাজীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজ উদ্দিন মিয়া এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “জাহাঙ্গীর আমাকে বলেছেন, তিনি কষ্টে আছেন, এখন রেস্টে আছেন।”
জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বুধবার রাত ১টার দিকে সর্বশেষ টেলিফোনের কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তার শেষ দেখা হয়েছে মঙ্গলবার রাতে।
ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই বৈঠকে ওয়াজ উদ্দিনও ছিলেন। বৈঠকের পর তারা একসঙ্গে গাজীপুরের পথে রওনা হন বলে জানান তিনি।
ওয়াজ উদ্দিন বলেন, “পথে তিনি (জাহাঙ্গীর) মায়ের কাছে যাবেন বলে বিদায় নেন। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার আর দেখা হয়নি।
“শুধু বুধবার রাতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে আমি পরিশ্রান্ত । তাই আমি রেস্টে আছি।”
বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তাকে (জাহাঙ্গীরকে) অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহকে সমর্থন দেয়ার পরামর্শ দেন। পরে উপযুক্ত স্থানে আসীন করার আশ্বাস দিলে জাহাঙ্গীর নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে আজমত উল্লাহকে সমর্থন দেন।”
বিএনপি ইতোমধ্যে অভিযোগ তুলেছে, জাহাঙ্গীরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী বিধিও লঙ্ঘিত হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বাস্তবায়নের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। এনিয়ে যে কমিটি হয়, তার আহ্বায়কও ছিলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে দলের সমর্থন পাওয়ার প্রত্যাশী ছিলেন জানিয়ে ওয়াজ উদ্দিন বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিলেন। সমর্থন না পেয়ে হতাশ ছিলেন তিনি।
দল আজমত উল্লাহকে সমর্থন দিলেও নির্বাচনে লড়াই থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রচার চালিয়ে যান জাহাঙ্গীর।
জাহাঙ্গীর গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান। মেয়র পদে প্রার্থী হতে ওই পদ থেকে ইস্তফাও দেন তিনি।
তবে ওয়াজ বলেন, “ওই পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি বলে জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দুই-এক দিনের মধ্যে কাজে যোগ দেবেন তিনি।”
জাহাঙ্গীর নির্বাচন থেকে ‘সরে’ দাঁড়ালেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তার নাম ব্যালট পেপারে থাকবে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আজমত উল্লাহ ছাড়াও প্রার্থী রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত এম এ মান্নানসহ পাঁচজন।