কম খরচে সৌদি যাওয়া যাবে : প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার আবারও উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। এ ছাড়া ভিসা, মেডিকেল ফি, কর্মীর এয়ার টিকিট সবই দেবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।’
আজ রোববার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ১৮ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মন্ত্রী সৌদি আরব সফরে ছিলেন। ২৪ জানুয়ারি তিনি দেশে ফেরেন।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘এবার খুব কম খরচে সৌদি আরবে যাওয়া যাবে। সৌদি আরবে কম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো শুরু হলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে।’ ভিসা কেনাবেচাকারীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, প্রমাণিত হলে ১৫ বছরের জেল হবে।
কবে নাগাদ সৌদিতে কর্মী পাঠানো শুরু হতে পারে—জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, সৌদি বাদশার মৃত্যুর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে তাঁরা জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু করবে।
সরকারি, নাকি বেসরকারিভাবে কর্মী যাবে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মীরা সৌদিতে যাবেন। তবে এ জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি কী পরিমাণ ফি নেবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর পর সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। পরে এজেন্সিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এগুলো ঠিক করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে ২২ লাখ কর্মীর তথ্যভান্ডার রয়েছে। এদের মধ্য থেকে কর্মীরা সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন। যাঁরা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাঁরাও চাইলে সৌদি যেতে পারবেন।’
সৌদি আরবে দীর্ঘদিন শ্রমবাজার বন্ধ থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আগে বিভিন্ন সরকারের সময়ে অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিতভাবে চাহিদার চেয়ে বেশি কর্মী সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গিয়েছে। আট থেকে ১০ লাখ টাকা অভিবাসন ব্যয়ে কর্মীদের বিদেশ যেতে হয়েছে। এই ব্যয় তুলতে গিয়ে অনেক কর্মী অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যান। তাঁদের কারণে বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সে দেশের সরকারের নজরে এলে তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ রাখে।’
বর্তমান সরকার গত মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সৌদি আরবে অভিবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানে ও শ্রমবাজার খুলতে উদ্যোগ নেয় বলে জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব সফর করেছেন। আমি নিজেও একাধিকবার দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ফলে ২০১৩ সালে আট লাখ বাংলাদেশি কর্মী সৌদিতে আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) পরিবর্তনসহ বৈধতার সুযোগ পান।’
মন্ত্রী জানান, এবারের সফরে তাঁর সঙ্গে সৌদি শ্রমমন্ত্রীর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনার বিষয়টি জানালে সৌদি সরকার খুশি হন ও তাঁরা শিগগিরই দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে আবারও শ্রমিক নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া সৌদি উপপ্রধানমন্ত্রী ও ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মুকরিন বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক বেগম শামছুন্নাহার, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজরত আলী, যুগ্মসচিব নূরুল ইসলাম প্রমুখ।