কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ রাষ্ট্রপতিরও
সিনিয়র রিপোর্টার এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পেট্রলবোমা ও আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষের হত্যায় জড়িত লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বললেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। যারা এসব ঘটনায় জড়িত, তাদের তিনি গণতন্ত্র, মানবতা ও সভ্যতার শত্রু হিসেবেও উল্লেখ করেন। আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৫ পালনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি পুলিশ বাহিনীকে এ নির্দেশ দেন। খবর বাসসের।
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশ সপ্তাহ- ২০১৫ উপলক্ষে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মানুষকে পোড়াবে বা আঘাত করবে, তাদের বিরুদ্ধে যত কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেটা আপনারা নেবেন। কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। যা কিছু হোক, সেই দায়িত্ব আমি নেব। কিন্তু মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতেই হবে। ’ আজ রাষ্ট্রপতিও একই নির্দেশ দিয়েছেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের লোক গণতন্ত্র ভালোবাসে এবং তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে দলমতের ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই এখানে। গণতন্ত্র চর্চার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা দেখানোর রীতি চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য একটি আধুনিক ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী প্রয়োজন। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে পুলিশ সদস্যদের সক্রিয় থাকতে হবে। তিনি বলেন, অপরাধীদের দমন ও আইনের কাছে সোপর্দ করা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের যথাযথ তদন্তে তাদের সক্রিয় থাকতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের তাঁদের সর্বোচ্চ পেশাদারি ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন নিয়ে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেদিকে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। ’
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই জনবান্ধব হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা তাদের এ ধরনের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের এই ভূমিকা দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাদের দায়িত্ব আগামী দিনে পালন অব্যাহত রাখবে বলেও রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, সরকার ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালে ৭৩৯ টি ক্যাডারসহ ৩২ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি শিল্প পুলিশ, বিশেষ নিরাপত্তা ও প্রোটেকশন ব্যাটালিয়ন, তদন্ত ব্যুরো, পর্যটন পুলিশ ও নৌ পুলিশের মতো কয়েকটি বিশেষ ইউনিট গঠন করেছে। ২০১৩-২০১৪ সালে দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।