আলোচনা না করলে কিছু বদলানো সম্ভব নয়: অমর্ত্য সেন
মনির হোসেন মিন্টু, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: গণতন্ত্রে আলোচনা না করলে কোনো কিছু বদলানো সম্ভব নয়; কিন্তু দিন দিন আলোচনার জায়গাটা সংকীর্ণ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন।
আজ সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে নিজের লেখা বইয়ের অনূদিত সংস্করণ ভারত: উন্নয়ন ও বঞ্চনা–এর প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রথম আলো ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অমর্ত্য সেন ‘অর্থনৈতিক প্রগতি ও মানবিক প্রগতি’ শীর্ষক বক্তব্য দেন।
বক্তৃতায় অমর্ত্য সেন অর্থনৈতিক প্রগতি ও মানবিক প্রগতির পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারটি তুলে ধরে বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও মানবিক প্রগতি স্থির হয়ে থাকতে পারে। মানবিক প্রগতির জন্য দেশের সব নাগরিকের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানব উন্নয়ন–সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিশ্চিত করা দরকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে অবশ্যই সরকারের প্রধান ভূমিকা পালন করতে হয়।
ভারতের উদাহরণ টেনে অমর্ত্য সেন বলেন, ভারত ১৯৪৭ সালের পর থেকে ক্রমান্বয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে পারলেও মানবিক প্রগতি সুনিশ্চিত করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলোতে ১৯৯০ সালে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানে এগিয়ে আছে।
অ্যাডাম স্মিথের দ্য ওয়েলথ অব নেশনস বইয়ের উদাহরণ টেনে অমর্ত্য সেন বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে একদিকে যেমন মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়, তেমনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মানবিক প্রগতির জন্য কাজ করতে সরকার টাকা পায়। তিনি বলেন, নাগরিকদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থার দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত; বেসরকারিভাবে তা সবার জন্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বক্তৃতায় ভারতের কেরালা রাজ্যের উন্নয়নের উদাহরণ টেনে অমর্ত্য সেন বলেন, মানবিক প্রগতি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে। মানবিক প্রগতি ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন বঞ্চনার সৃষ্টি করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।