বিআরটিএর উপপরিচালকের স্ত্রী খুন
মেহেদী আজাদ মাসুম, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তির হামলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপপরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের স্ত্রী কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শীতাংশু ও তাঁর দুই মেয়ে শ্রুতি বিশ্বাস (১৪) ও অদ্রি বিশ্বাস (৬) আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের ভাতিজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রত্যয় বিশ্বাসের ভাষ্য, এ ঘটনায় তুলনামূলকভাবে কম আঘাত পেয়েছে শীতাংশু শেখরের বড় মেয়ে শ্রুতি। শ্রুতির কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের বাসায় শীতাংশুর পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তি একটি কেক নিয়ে আসেন। কিছুদিন আগে শীতাংশুর জন্মদিন ছিল। জন্মদিনে আসতে না পারার দুঃখপ্রকাশ করে ওই ব্যক্তি শীতাংশুকে ‘স্যার’ সম্বোধন করে তাঁর আনা কেক খাওয়ার অনুরোধ করেন। কেক খাওয়ার পর মেঝেতে পড়ে যান শীতাংশু। এ সময় ভারী কোনো বস্তু দিয়ে শীতাংশুর মাথায় সজোরে আঘাত করেন ওই ব্যক্তি। শব্দ শুনে প্রথমে শীতাংশুর ছোট মেয়ে অদ্রি এগিয়ে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
প্রত্যয় বিশ্বাস আরও বলেন, এরপরে শীতাংশুর স্ত্রী কৃষ্ণা এগিয়ে গেলে তাঁকেও কোপানো হয়। চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে শীতাংশুর বড় মেয়ে শ্রুতি ওই বাসারই একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে ভেতরে লুকিয়ে থাকে। এ সময় ফোন করে ঘটনাটি স্বজনদের জানায় সে। কিছুক্ষণ কোনো শব্দ না পেয়ে ওই ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পর শ্রুতি দেখে ওই ব্যক্তি দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। আগুনের মধ্যে শীতাংশুর স্ত্রী কৃষ্ণাকে ছুড়ে ফেলেন তিনি। এতে কৃষ্ণার শরীর ঝলসে যায়। পরে শ্রুতিকে দেখতে পেয়ে সামান্য আঘাত করে ওই ব্যক্তি চলে যান। পরে আশপাশের প্রতিবেশীদের ঘরে গিয়ে শ্রুতি তাঁদের বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা আহত তিনজনকে উদ্ধার করেন। এঁদের মধ্যে কৃষ্ণাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শীতাংশু ও তাঁর দুই মেয়ে বর্তমানে মহাখালীর ঢাকা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হামলার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল ইসলাম জানান, তাঁরা জেনেছেন পরিচিত এক ব্যক্তি বাসায় ওই গিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়ে চলে গেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।