বাড়ির জন্য নিজের ভাইবোনকে খুন!
মনির হোসেন মিন্টু, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, রাজশাহীঃ রাজশাহীতে একটি বাড়ির মালিকানার জন্য গতকাল রোববার রাতে দুই ভাই-বোনকে আরেক ভাই হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সাদিকুল ইসলাম (৪৮) ও আক্তার জাহান (৪৫)। তরিকুল ইসলাম (৪২) নামের তাঁদের আরেক ভাই তাঁদের হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বাবার নাম আফসার উদ্দিন। নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকার ২১৫ / ০৩ নম্বর বাড়িটি তাঁদের।
পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, সাদিকুল ইসলাম গতকাল রাতে বাড়ির বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছোট ভাই তরিকুল ওঠে বাইরে থেকে সব ঘরের ছিটকিনি লাগিয়ে দেন। এরপর চাকু ও শাবল দিয়ে তিনি বড় ভাই সাদিকুলকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এক পর্যায়ে তিনি একটি ঘরের ছিটকিনি খুলে দেন। ঘরের ভেতর থেকে বের হয়ে তিনি যাঁকেই সামনে পেয়েছেন, তাঁকেই কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় তিনি কুপিয়ে জখম করেন ভাই মনিরুল ইসলাম, তাঁর ছেলে নিয়ামতুল্লাহ ও মেয়ে উম্মে কুলসুম এবং বড় বোন জাহানারা বেগম ও আক্তার জাহানকে। গুরুতর আহত বোন আক্তার জাহান ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিনিও আহত হন। চিৎকার ও হইচই শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে তরিকুলকে ধরে ফেলেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তরিকুল বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তরিকুলের দাবি, ২০০৭ সালে তাঁর মা সুফিয়া বেগমের নামে দুই কাঠা জমি কেনা হয়। ২০০৮ সালে ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করা হয়। ২০১০ সালে তাঁর মা এই বাড়িটি তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য ভাইবোনকে নামে রেজিস্ট্রি করে দেন।
চিকিৎসাধীন তরিকুলের দাবি, বাড়ি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার সময় তিনি ঢাকায় চাকরি করতেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাঁর ভাইবোনেরা মায়ের কাছ থেকে বাড়িটি লিখে নেন। পরে তাঁর পরামর্শে মা আইনের আশ্রয় নিয়ে দলিল বাতিল করে ২০১১ সালের ৩১ জুলাই তাঁর নামে বাড়িটি রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে ভাই-বোনদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। বোন আক্তার জাহান স্বামীকে নিয়ে ওই বাড়িতে ওঠেন। অন্যরা মিলে তাঁর ওপর অত্যাচার ও নানা মামলা করে হয়রানি করতে থাকেন বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁকে হত্যার জন্য ভাইবোনেরা পরিকল্পনা করেছেন—এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি তাঁদের হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে দাবি করেছেন।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, নিহত সাদিকুলের ছেলে ইউসুফ সিজার বাদী হয়ে তরিকুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ তরিকুলকে গ্রেপ্তার করেছে।