ঢাকাবাসীকে আগলে রাখার প্রত্যয় আনিসুলের
আজমী আনোয়ার, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ঢাকাকে বড় পরিবার মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদ প্রার্থী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, মেয়র নির্বাচিত হলে তাঁর দায়িত্ব হবে সততা দিয়ে নিষ্ঠা দিয়ে এ পরিবারটিকে আগলে রাখা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের ফুটপাতে ঢাকা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘কেমন ঢাকা চাই-মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক-এর প্রতি খোলা চিঠি’ অনুষ্ঠানে আনিসুল হক এসব কথা বলেন। ফুটপাতে লম্বা টেবিলে সাদা কাপড়ে ঢাকাবাসী তাঁদের প্রত্যাশার কথা লেখেন। আনিসুল হকের কাছে তাঁরা এক কিলোমিটার লম্বা চিঠিও লিখেন।
বাবা যেমন পরিবারকে আগলে রাখেন, তেমনি ২৪ লাখ ঢাকাবাসী পরিবারকে আগলে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আনিসুল হক বলেন, পরিবারের সঙ্গে থেকে সর্বশক্তি দিয়ে বড় পরিবারটিকে একটু স্বস্তি দেওয়া, নিরাপত্তা দেওয়া এবং একটি ভালো নগরী উপহার দেওয়া চেষ্টা করব। তিনি বলেন, ‘ঢাকাকে আমি একটি বড় পরিবার মনে করি। মেয়র নির্বাচিত হলে আমার দায়িত্ব হবে সততা দিয়ে নিষ্ঠা দিয়ে এ পরিবারটিকে আগলে রাখা। গত ২১ দিন ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। মানুষের স্বপ্নের কথা শুনছি। এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ চিঠি আমাকে শক্তিশালী করেছে।’
একটি নতুন জীবন শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক জানান, ২৪ লাখ ঢাকাবাসী পরিবারের সঙ্গে তাঁর পরিচিত হওয়া ও আত্মীয়তা শুরু হয়েছে।
আনিসুল হকের বক্তব্যের আগে ঢাকা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঢাকা নাগরিক সমাজের পক্ষে আনিসুল হককে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় তুমুল করতালি দেন উপস্থিত জনতা। জনতার পক্ষ থেকে স্লোগান দেওয়া শুরু হলে ‘এখন স্লোগান দিও না’ বলে গোলাম কুদ্দুছ সবাইকে থামিয়ে দেন।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, খোলা চিঠির মধ্য দিয়ে ঢাকাবাসী জানান দিয়েছে আগামী দিনে তারা কেমন ঢাকা দেখতে চায়। সেই প্রত্যাশার কথাই আনিসুল হককে জানানো হয়েছে। তিনি নির্বাচিত হলে সেই ভাবেই ঢাকাকে গড়ে তুলবেন।
আনিস ভাইয়ের বিকল্প নেই
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সাবেক সাংসদ তারানা হালিম, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়, আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, নাট্যব্যক্তিত্ব এনামুল হক, ক্রিকেটার হাবিবুল বাশার, ক্রিকেটার রকিবুল হাসান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ও তাঁদের প্রত্যাশার কথা লিখে জানিয়েছেন। অভিনেতা জয় লিখেছেন, ‘আনিস ভাইয়ের বিকল্প নেই’। আনিসুল হককে নিয়ে কে, কি লিখেছেন পড়তে পড়তে তার লেখাটিও পড়লেন। তবে পড়া শেষেই বললেন ‘এইটা বলতে আমার ভালো লাগছে না।’
মলমপার্টি মুক্ত ঢাকা চাই
ঢাকাবাসীর সমস্যার অন্ত নেই। তাই মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের কাছে একজন চিঠিতে ‘মলমপার্টি মুক্ত’ ঢাকা দেখতে চান বলে উল্লেখ করেছেন। ‘বাড়িওয়ালামুক্ত’ ‘রাজনীতিমুক্ত’ ‘যানজটমুক্ত’ ঢাকাও চেয়েছেন কেউ কেউ। সাবেক সাংসদ মাহফুজা লিখেছেন, ‘আমরা আনিসুল ভাইকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’
‘কে তুমি পড়িছ বসে আমার কবিতা খানি আজ হতে শতবর্ষ পরে’-কবিতার এই লাইন লিখে শতবর্ষ পরেও আধুনিক ও শৈল্পিক ঢাকা চাওয়ার প্রত্যাশার কথা লিখেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক সাংসদ তারানা হালিম। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমি একজন শিল্পীর জায়গা থেকে কথাগুলো লিখেছি। আমি চাই ঢাকা শহর কবিতার মতো হোক। একটু চালাকি করে লিখেছি, তবে কবিতার এ লাইনের মধ্যে সব দাবির কথা বলে দিয়েছি।’
টেবিলের ওপর রাখা সাদা কাপড়ে লেখা শেষ হলে কর্মীরা তা তুলে নতুন কাপড় বিছিয়ে দিচ্ছিলেন। আর লেখা কাপড়গুলো কর্মীরা একটার সঙ্গে আরেকটা লাগিয়ে লম্বা লাইন করে প্রদর্শন করেন।
ঢাকা নাগরিক সমাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছে গতকাল বুধবার। ২৫১ বিশিষ্ট সদস্য নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। এক কিলোমিটার লম্বা চিঠিটি পরে আনিসুল হকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে জানালেন আয়োজকেরা।