সুখবর শোনালেন মুশফিক–সাব্বির
মনির হোসেন মিন্টু, স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মাঝখানে দশ-এগারো হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব। ভিন্ন দেশ, ভিন্ন কন্ডিশন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলে এসেও তাই বেশি দিনের বিশ্রাম মেলেনি। এবার যে নিজেদের কন্ডিশনেই নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ। সেই মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বিসিএল। সত্যি বলতে কি, তাতে জাতীয় দলের তারকাদের পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে সুখকর নয়। বিশেষ করে বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়েছিলেন যাঁরা।
অবশেষে আজ মুশফিক-সাব্বিরের ব্যাটে সুখবর মিলল। দুজনই খেলছেন বিসিবি উত্তরাঞ্চলের হয়ে। দুজনে আজ ৭৮ ও ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। বিশেষ করে বিশ্বকাপে নিচের দিকে নেমে মারকাটারি ব্যাটিং করে বিশ্বের নজর কাড়া সাব্বিরের আজকের ইনিংসটাও ছিল তেমনই। ৬৬ রান করতে খেলেছেন মাত্র ৩৪ বল। ৪৬-ই এসেছে চার-ছক্কা থেকে। সাতটি চার মেরেছেন, তিনটি ছক্কা। মুশফিক ছক্কা হাঁকিয়েছেন তাঁর চেয়েও একটা বেশি। সঙ্গে পাঁচটা চার। ৭৮ রান এসেছে ৬৬ বলে।
এই দুজনের সঙ্গে নাঈম ইসলামের ৮০, মাহমুদুল হাসানের ৪৮, আর শেষ দিকে নেমে নাসির হোসেনের ৬ চারে ২২ বলে ৩৯ রানের ইনিংসগুলোর সৌজন্যে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তিন শ পেরোনো স্কোর করেছে বিসিবি উত্তরাঞ্চল। ৭ উইকেটে তোলা ৩২১ রান জয়ের জন্য যথেষ্ট মনে হচ্ছে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত। প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল যে ৩১ ওভার শেষে ৬ উইকেটে মাত্র ১১৮ রান তুলেছে।
ফতুল্লার মতো মিরপুরের ম্যাচটারও ভবিষ্যদ্বাণী করে দেওয়া যাচ্ছে। ইসলামি ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ৮ উইকেটে মাত্র ২১৮ রান তুলেছিল। কিন্তু সেটাই অনেক বড় স্কোর মনে হচ্ছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের কাছে ৩০ ওভারে মাত্র ৯০ রান তুলেছে তারা, হারিয়ে ফেলেছে ৭ উইকেট।
সত্যি বলতে কি, ম্যাচের ফল নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে যতটা না আগ্রহ, তার চেয়ে বেশি কৌতূহল, তারকারা কে কেমন করছেন। মুশফিক-সাব্বির সুখবর শোনালেও কিন্তু বাকিরা চিন্তা ভাঁজ বাড়াচ্ছেনই। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি আলো ছড়ানো মাহমুদউল্লাহ হয়তো পাকিস্তানের জন্য রান জমিয়ে রাখছেন। প্রথম ম্যাচে ৪ করার পর তবু দ্বিতীয় ম্যাচে ৩১ রানের ইনিংসে কিছুটা ঝলক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল। আজ আবার আউট হয়েছেন ১১ রান করে।
প্রথম ম্যাচে ওভারে ছয়ের ওপরে রান দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে এক উইকেট, সঙ্গে ব্যাট হাতে অপরাজিত ফিফটি। মাশরাফি ফিরে এসেছিলেন দারুণভাবে। কিন্তু আজ দুটো উইকেট পেলেও ১০ ওভারে দিয়েছেন ৬৯ রান। গত ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া রুবেলও আজ ৯ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে মাত্র দুটি উইকেট।
আজ অবশ্য সবচেয়ে বেশি চোখ ছিল রনি তালুকদারের ওপর। গতকালই জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। ওয়ানডে অভিষেকও একরকম নিশ্চিত। সেই রনি ৭ রান করে আউট হয়েছেন আবুল হাসানের বলে। ক্রিকেটের মজাটা বোধ হয় এইখানেই। দল ঘোষণার পর যে আবুলকে দলে দেখে প্রায় সবারই মুখে প্রশ্ন, সেই তিনি ৫৩ বলে ৫১ করেছেন। আটে নেমে খেলা তাঁর এই ইনিংসটাই পূর্বাঞ্চলকে ২০০ পেরোতে সাহায্য করেছে। আবুল এখানেই থেমে থাকেননি। বল হাতে ৭ ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট—তাঁর কারণেই ধুঁকছে মধ্যাঞ্চল।
যেন আগের দিন তাঁকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পরিহাস করে ‘অলরাউন্ডার’ বলার যোগ্য জবাব!