দুই বছর পরও অনেকেই ক্ষতিপূরণ পাননি
আজমী আনোয়ার, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রানা প্লাজা ধসের দুই বছর পূর্তিতে আজ শুক্রবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। সমাবেশে বলা হয়, ভবনধসের দুই বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে ক্ষতিপূরণ পাননি। এ ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁরা অনেকে জামিনে রয়েছেন। সমাবেশ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়।
সকালে রানা প্লাজার ধসে পড়া ভবনের সামনে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ওই সমাবেশ করে। রানা প্লাজা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনা নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার বলেন, ভবনধসের দুই বছর পার হলেও নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁরা অনেকে জামিনে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে কোনো অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। রানা প্লাজা ধসের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, এ জন্য আইন বদলের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি পোশাকশিল্পের জন্য ক্ষতিকর।
সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভানেত্রী নাজমা আক্তার বলেন, শুধুমাত্র মালিক ও সরকারের অবহেলা আর অতি মুনাফার কারণে নিরীহ শ্রমিকেরা বারবার লাশে পরিণত হচ্ছেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, শ্রমিকেরা গণতন্ত্রের ভিত্তি। অথচ এ দেশে তারাই সবচেয়ে অবহেলার শিকার হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে রানা প্লাজার শ্রমিকদের জন্য কোনো অর্থ নেই-এ ধরনের বক্তব্য প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।
সরকার ও তৈরি পোশাক মালিকদের সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ ও ভবনধসের দিনকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আশরাফউদ্দিন খান।
সমাবেশ শেষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পৃথক মিছিল বের হয়।
ভোর থেকে ধসে পড়া ভবনের সামনে স্থাপিত বেদিতে ফুল দিয়ে নিহত শ্রমিকদের স্মরণ করে রানা প্লাজা শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ শ্রম অধিকার ফোরাম, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, ফায়ার সার্ভিস, রানা প্লাজা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সমিতি, ঢাকা জেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।