ছাত্রীদের হুমকি ছাত্রলীগ নেতা-নেত্রীর !
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কুষ্টিয়াঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলে ঢুকে ছাত্রলীগের এক নেতা ও এক নেত্রী ছাত্রীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়,গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল শাখার সভাপতি আরিফা সুলতানা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে অনাবাসিক এক ছাত্রীকে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে তোলার চেষ্টা করেন। এতে সাধারণ ছাত্রীরা বাধা দিলে তিনি ওই হুমকি দেন। এরপর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমদাদুল হক সোহাগও একই হুমকি দেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থীর দেওয়া ভাষ্য, আরিফা গত কয়েক দিন ধরে হলের বিভিন্ন কক্ষে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে অনাবাসিক ছাত্রীদের তোলার চেষ্টা করছেন। হল কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ ছাড়া কোনো ছাত্রীকে হলে ওঠানোর ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আরিফা এক অনাবাসিক এক ছাত্রীকে হলের ৩১২ নম্বর কক্ষে ওঠাতে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই কক্ষের আবাসিক ছাত্রীরা প্রাধ্যক্ষের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানালে আরিফা রেগে যান। ছাত্রীদের অশালীন ভাষায় গালাগাল করে একপর্যায়ে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ওই কক্ষের ছাত্রীদের জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন।
ছাত্রীদের ভাষ্যমতে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি ইমদাদুল হক ও ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে যান। এতে হলের আবাসিক সাধারণ ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ছাত্রলীগ নেতা মেয়েদের বিভিন্ন হুমকি দেন। অনাবাসিক ওই ছাত্রীকে ৩১২ নম্বর কক্ষে উঠতে না দেওয়ায় হলের ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে শাসিয়ে যান।
হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেত্রী আরিফা সুলতানা বলেন, ‘কথা-কাটাকাটি হয়েছে মাত্র, পরে প্রভোস্ট স্যারের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা হয়।’
শাসানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে ইমদাদুল হকের দাবি, ‘ছাত্রীদেরকে কোনোরকম শাসানো হয়নি। হলে একটি সমস্যা হয়েছিল, শুনে তা সমাধান করতে গেছি মাত্র।’
এ ঘটনার হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘হলের নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়মানুযায়ী সিট বরাদ্দ ছাড়া কোনো মেয়েকে হলে থাকতে দেওয়া হয় না। হলের সমস্যার কথা শুনে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছি।’ ছাত্রলীগ নেতার কর্মীসহ হলে ঢোকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘হলে সমস্যা হয়েছে বিষয়টি জানার পর ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ দুজনকে ৮-১০ মিনিটের জন্য হলে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলাম। তবে কেউ যদি কোনো মেয়েকে হুমকি দেয়, তবে এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’