ডিসিসি নির্বাচনে ভোট কারচুপি অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না ইসি

dccবিশেষ প্রতিনিধি, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা : ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট কারচুপির কোন অভিযোগই আমলে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুনের তদন্তের আহবানও উপেক্ষিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে শতাধিক অভিযোগ জমা পড়লেও এ বিষয়ে যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই কমিশনের।
রাজধানী ঢাকা ও চট্রগ্রামসহ তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটে জালিয়াতি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচনের পরের দিন ২৯ এপ্রিল সকাল থেকেই অভিযোগ জমা পড়তে থাকে নির্বাচন কমিশনে। অনিয়মের বিষয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থিরাই শুধু নয়, ক্ষোভে ফেটে পড়েন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাও। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা অভিযোগ তোলেন, ক্ষমতাসীনদের ক্যাডাররা তাদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। নানা অনিয়ম নিয়ে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন।
রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া, কল্যানপুর, মিরপুর, বনানী, গুলশান, বারিধারা ও উত্তরায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া নিয়ে গঠিত ১৪নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রেজাউল হক বাহার এবিসিনিউজবিডি’র এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। তার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রার্থী হলেও স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা তাকে হারিয়ে দিয়েছেন। বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন।’
রেজাউল হক বাহার এবিসিনিউজবিডি’কে আরো বলেন, তার ১৪ নং ওয়ার্ডে মোট ৫২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হয়। এর মধ্যে ৩৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে তিনি এগিয়ে ছিলেন। বাকি ১৩টির ফলাফল ঘোষনা না করে তার এজেন্টসহ রেজাল্ট সিট (ফলাফলের কাগজ) অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর নির্বাচন কমিশন রাতে আর ফলাফল ঘোষনা করতে পারেনি। পরবর্তি দিন সকালে ঘোঝামিলের একটি ফলাফল ঘোষনা করে কমিশন। এতে সামান্য ভোটের ব্যবধানে তাকে পরাজিত দেখানো হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এই দিন (২৯ এপ্রিল) দুপুরেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দাখিল করেন।
কমিশনের একটি সূত্র জানায়, ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিনের নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত শতাধিক পত্র জমা হওয়ার পর তরিঘরি করে ২৯ এপ্রিল বিকেলে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পরিচালক তথ্য ও জনসংযোগ আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক।
ফারহান হক বলেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির ভোট বর্জনের বিষয়ে মহাসচিব অবগত রয়েছেন। ভোট কারচুপির উত্থাপিত সব অভিযোগ তদন্ত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে বিরোধী পক্ষ গণতান্ত্রিক উপায়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করবে বলে আশা করছেন মহাসচিব।
এ ছাড়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের ভিন্ন মতগুলো প্রকাশে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বান-কি মুন।
মুখপাত্র বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে সব রাজনৈতিক নেতার প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন মহাসচিব।
সিটি নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও কেন্দ্র দখল বিষয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পক্ষ থেকেও ভোট কারচুপির অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে প্রথমে চট্টগ্রাম ও পরে ঢাকা দুই সিটির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ