নেইমারকে আগলে রাখছেন মেসি
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ঠিক যেন আপন বড় ভাই। রক্তের কী অসম্ভব টান। ছোট ভাইকে স্নেহ, মমতা আর ভালোবাসায় বুকে আগলে রাখছেন। নেইমারের সঙ্গে লিওনেল মেসির সম্পর্কটা এখন এমনই।
১১ বছর ধরে পেশাদার ফুটবল খেলে লাল কার্ড মাত্র একবারই দেখেছেন, সেটিও আর্জেন্টিনার হয়ে একদম প্রথম ম্যাচে। এত দীর্ঘ ক্যারিয়ারে লাল কার্ড তো দূরের কথা, হলুদ কার্ডই দেখেন কালেভদ্রে। এই মৌসুমে ৬৬ ম্যাচ খেলে হলুদ কার্ড দেখেছেন মাত্র সাতবার। কারণ মেসি মাঠে মাথা গরম করেন না, ফাউলও করেন সামান্যই।
সেই মেসি কাল ভয়ানক রেগে গেলেন। মাঠে মেসিকে এমন অগ্নিমূর্তিতে খুব কমই দেখা গেছে। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে ফ্রি কিক পেয়েছিল বার্সা। নেইমার ফ্রি কিক নিতে সময়টা একটু বেশিই নিচ্ছিলেন। অ্যাটলেটিকোর খেলোয়াড়েরা এমনিতে সব সময় যেন তেতে থাকে। কালকের ম্যাচটা তাদের কঠিন মানসিক পরীক্ষাও নিয়েছে। লিগ শিরোপা হাতছাড়া তো হচ্ছেই, লিগের তিন নম্বর জায়গা ধরে রেখে চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ালিফাই করাটাও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।
নেইমারের সময়ক্ষেপণ আগুনে যেন ঘি ঢালল। অ্যাটলেটিকোর খেলোয়াড়েরা তেড়ে গেল নেইমারের দিকে। তখনই মেসি বুক আগলে তেড়ে আসা গডিনকে আটকালেন। সেকেইরার সঙ্গে মাথায় মাথা ঠুকে ঝগড়াও করলেন বেশ কিছুক্ষণ। পরিস্থিতি শান্ত করতে তিন তিনটা হলুদ কার্ড দেখাতে হলো রেফারিকে। এর একটা বরাদ্দ হলো মেসির নামে।
মাঠের বাইরেও নেইমারের সঙ্গে মেসির সম্পর্ক এমনই। ৫ বছরের বয়সের ব্যবধান ঘুচিয়ে দুজন দুজনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েও মেসি পেনাল্টি না দিয়ে সেটা তুলে দিয়েছিলেন নেইমারের হাতে। আর চ্যাম্পিয়নস লিগে নেইমার তাঁর হ্যাটট্রিকের সুযোগ বিসর্জন করেছেন মেসির জন্য।
মেসির জন্য ভূমিকাটা আরও একটু বড়। তিনি শুধু বন্ধু নন, নেইমারের জন্য বড় ভাই, পথপ্রদর্শকও। যেন ঋণ শোধ করছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে মেসির জন্য আপন বড় ভাইয়ের চেয়েও বেশি কিছু ছিলেন রোনালদিনহো। মেসি বার্সার হয়ে প্রথম গোলটাই করেছেন রোনালদিনহোর দুর্দান্ত এক পাস থেকে। ব্রাজিলের এই সাবেক তারকা গত বছর সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, ‘মেসিকে সেরা হয়ে উঠতে আমি সাহায্য করেছি। আমি জানি নেইমারের জন্য মেসিও তা-ই করবে।’
রোনালদিনহো নেই। তবে আছেন দানি আলভেজ। নেইমারকে যেভাবে সহায়তা করেন মেসি, একইভাবে মেসিকে আলভেজ। ক্লাব জার্সিতে আজেন্টিনা অধিনায়ককে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন বার্সার ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার। দুজনের রসায়নটাও দারুণ। এ কারণেই আলভেজকে বলা হয় মেসির ‘আত্মার আত্মীয়’।