শহর মাতিয়ে গেলেন দীপিকা

বিনোদন ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাংলাদেশির ভালোবাসার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সৌন্দর্য-সৌরভে সবাইকে বিমোহিত করতে লাক্সের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে একটি বহুজাতিক কোম্পানির আমন্ত্রণে ৩০ মে দুপুর ১২ টার দিকে বাংলাদেশে আসেন দীপিকা। এরপর রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির রাজদর্শন হলে রিহার্সেলে অংশ নেন।

শনিবার বিকাল গড়াতেই বাংলাদেশের হাজারো তরুণ-তরুণীরা চোখের সামনে দীপিকাকে এক ঝলক দেখার জন্য ভীড় জমাতে থাকেন।

সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় জমকালো আসর। প্রথমেই মঞ্চে প্রাণ দিতে আসেন বাপ্পা মজুমদার ও পার্থ বড়ুয়া। এরপর আসেন নেমেসিসের ভোকাল জোহাদ, কনা ও জন। বাপ্পা ‘বৃষ্টি পড়ে’, জোয়াদ ‘উইদাউট ইউ’, কনা ‘জ্যামিতিক ভালোবাসা’, জন ‘আই লাভ ইউ মোর দ্যান আই ক্যান সে’ ও পার্থ বড়ুয়া ‘মন শুধু মন ছুয়েঁছে’ শিরোনামের গানগুলো পরিবেশন করেন।

এরপর রাজদর্শন হলের পাশে থাকা ২টি বড়পর্দায় দেখা যায় সংগীতশিল্পী তাহসানের মুখ। বলতে গেলে পুরো অনুষ্ঠানের হিরো হিসেবে থেকেছেন তিনি। উপস্থাপনার অংশ হিসেবে মাইক্রোফোনটা হাতে নিলেও অনুষ্ঠানের শেষ পর্যন্ত ছিলেন তিনি। এমনকি দীপিকার সঙ্গেও ছিল তার মজার কথোপকথন।

তাহসান তার কন্ঠে ‘আলো’ শিরোনামের গানটির ২টি লাইন গেয়ে আমন্ত্রণ জানালে মঞ্চে আসেন লাক্সের সেই প্রিয়মুখগুলো। মডেল ও অভিনেত্রী শমী কায়সার, সাদিয়া ইসলাম মৌ, ঈশিতা ও কুসুম শিকদারের কথা।
এরপরই আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক রাত ৯টা ২ মিনিট। সব আলো বন্ধ এবং সবার মুখে তখন একটাই নাম। দীপিকা দীপিকা দীপিকা। দোতলা সজ্জিত মঞ্চ থেকে নীচে নেমে আসলেন দীপিকা। সঙ্গে তাহসানও। দূর থেকে এক ভক্তের কণ্ঠ ভেসে আসলো ‘আই লাভ ইউ দীপিকা’।

দীপিকা বলে ওঠলেন, ‘আই কানট হেয়ার ইউ’। এরপর তাহসান প্রশ্ন করলেন, প্রথমবার বাংলাদেশে আসলেন, কেমন লাগছে? দীপিকা উত্তরে বললেন, ‘বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি অনেক বেশি খুশি ও আনন্দিত। আমার ভক্তদের ভালোবাসা সত্যিই আমাকে আবেগপ্রবণ করে দেয়। লাক্স আমার কাছে পরিবারের মত, এজন্য বাংলাদেশে আসা।

এরপর সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খান দীপিকার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি এখন অনেক সুন্দরী এক তারকার সঙ্গে। আমাকে যা বলতে বলা হবে তাই করবো। আমি যদিও গাইতে পারি। আমি গান করি, আপনি আমার গানের তালে ড্যান্স করেন।

এই কথা বলার পর দীপিকা বলেন, আপনি গান না নাচ করেন। বলেই হাসি। এরপর দীপিকা নাচের মুদ্রাও দেখায় তাহসানকে। এরপর তাহসান চেষ্টা করে বলে আমি গান করি। ‘তুমি ছুঁয়ে দিলে মন’ শিরোনামের গানটির তালে একটু নাচ করেন দীপিকা। তাহসানও তার সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা করেন।

ফ্যানদের জন্য আসে ক্ষন। মঞ্চের সামনে থেকে ডাকা হয় ফ্যানদের। চলে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। প্রথমেই লাল পোশাক পড়া মেয়ে স্নেহা মঞ্চে এসে জানতে চান দীপিকা অভিনীত ‘পিকু‘ ছবির একটা বাংলা সংলাপ। দীপিকা সঙ্গে সঙ্গে বাংলায় বলেন, কিছু হবে না। এরপর আবারো বলেন, বাংলা গানের শিরোনাম ‘এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হবে তুমি বলোতো।’

এরপর মঞ্চে আসেন বেশ কয়েকজন ভক্ত। এই কয়েকমাসে ১২ লাখ এসএমএস থেকে ১হাজার জন উত্তরাদাতার মধ্যে কয়েকজন ভক্ত মঞ্চে আসার সুযোগ পান। এক ভক্ত তো মঞ্চে আমন্ত্রন পেয়ে রীতিমত দীপিকাকে প্রস্তাব দেন প্রেমের। ভক্তদের সঙ্গে নাচতেও দেখা যায় তাকে। বলতে গেলে এক কথায় কিছুক্ষনের জন্য পুরো শহর মেতেছিল দীপিকার মোহে।

দীপিকা পাড়ুকোন। শুধু নামে না, গুণেও কোনোদিক থেকে পিছিয়ে নেই ডেনমার্কে জন্ম নেয়া এই তারকা। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই তারকার টোলপড়া হাসি, চোখের গভীরতা আর অভিনয়ের মায়াজালে জড়িয়ে আছে লাখো ভক্ত। লাক্স এর নতুন মোড়কের সাবান নিয়ে বেশ কয়েকমাস ক্যাম্পেইনের পর প্রথমবারের মতো ঢাকার মাটিতে পা রাখলেন দীপিকা।

জানা যায়, ‘অ্যা মেসমারাইজিং ফ্রাগ্র্যান্ট ইভেনিং’ শো শেষে রাতেই তিনি আবার উড়াল দিয়েছেন মুম্বাই শহরে। ইউনিলিভার বাংলাদেশের লাক্স সাবানের প্রচারণার অংশ হিসেবেই ছিল তার এই ঢাকায় আসা।