সাত খুনের আত্মস্বীকৃত তারেক কার জামাই !
মনির হোসেন মিন্টু, বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : নারায়নগঞ্জে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ খুনের আত্মস্বীকৃত খুনি, সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত তারেক সাঈদ মোহাম্মদ কার জামাই! পুলিশ, র্যাব না সরকারের?
এমন প্রশ্ন তুলেছেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শুরু করে নারায়নগঞ্জ আদালত পর্যন্ত, সব জায়গাতে তিনি থাকছেন জামাই আদরে। এই খুনি আসলে কার জামাই।’ উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই (মঙ্গলবার) চাঞ্চল্যকর ৭ খুনের মামলার অন্যতম আসামি র্যাব-১০ এর সাবেক অধিনায়ক (সিও) তারেক সাঈদ মোহাম্মদকে কোন প্রকার হ্যান্ডকাপ ছাড়াই নারায়নগঞ্জ আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এই দিন আলোচিত ৭ খুনের মামলায় দায়ের করা দুই মামলার অভিযোগ পত্র গ্রহন করেছেন আদালত। একই সাথে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাইদুজ্জামান শরিফ এসব আদেশ দেন।
নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘আমরা জানি খুনি তারেক সাঈদ সরকারের এক মন্ত্রীর মেয়ের জামাই। একারনে কি তার জন্য আইন আলাদা হবে।’ তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে জানতে চাই, তারেক সাঈদ সরকারের কে? কার জামাই! পুলিশ, র্যাব না সরকারের?
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘আপনাদের এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। এটা কোর্ট পরিদর্শক ভালো বলতে পারবেন।’
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পরিদর্শক হাবিবুর রহমান মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ এই আসামীদের নারায়ণগঞ্জে পাঠান। তারাই বলতে পারবেন কেন হাতকড়া ছাড়া আসামি দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়নগঞ্জে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোড থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাসিক প্যানেল মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং এাডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের শীতালক্ষা নদীতে নজরুল ও চন্দন সরকারসহ অপহৃত ৬ জনের এবং এর একদিন পর ১ মে বাকি ১ জনের লাশ ভেসে ওঠে।
চাঞ্চল্যকর এই ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন এসময় ভারতে পালিয়ে যায়। গত ১৪ জুন দুই সহযোগীসহ নুর হোসেনকে কলকাতা পুলিশের একটি দল দমদম বিমানবন্দরের পাশের একটি ফ্ল্যাট থেকে আটক করে। সেই থেকেই কারাগারে আটক আছেন নূর হোসেন।
৭ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত র্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়নগঞ্জের সাবেক ক্যাম্প প্রধন লে. কমান্ডার এম এম রানা বর্তমানে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন। তারা সকলেই ৭ খুনের এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।