সরকারি চাকুরে গ্রেপ্তারে পূর্ব অনুমোদন, টিআইবির উদ্বেগ
এম. সাইফুর রহমান, প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : ‘ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না’ এই বিধান রেখে ১৩ জুলাই সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৫-এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
১৪ জুলাই (মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিধানটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী একই অপরাধের জন্য কোনো বিশেষ শ্রেণির জন্য বিশেষ মাপকাঠি প্রয়োগের সুযোগ নেই। প্রস্তাবিত বিধানটি সংবিধান প্রদত্ত সকল নাগরিকের সমান অধিকারের অঙ্গীকারের পরিপন্থী। বিশেষ একটি শ্রেণি ও পেশার মানুষকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে প্রস্তাবিত সরকারি কর্মচারী আইনে বৈষম্যমূলক যে বিধান রাখা হয়েছে তা সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী’ এই ধারণার লঙ্ঘন। যার ফলে সরকারি খাতে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে উৎসাহিত করা হবে।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা এবং বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৯৭ (১) ধারার উদাহরণ টেনে সরকারি চাকরিজীবীদের আলাদা মর্যাদা প্রদানের ব্যাপারে যে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে তা থেকে এটি সুস্পষ্ট যে সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৫ এর বিতর্কিত বিধানটিই শুধু নয় বরং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ এবং বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৯৭ (১) ধারাকেও বাতিল করতে হবে, কারণ তা সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদের মর্মবাণীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংবিধানের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি আইন প্রণয়নে ৪৪ বছর বিলম্ব হওয়ার পর এমন একটি বিতর্কিত ও পশ্চাদমুখী বিধানের অন্তর্ভুক্তিতে জনগণ বিস্মিত। কারণ ফৌজদারি মামলায় এমনকি সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীসহ সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদেও গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
সংসদে তোলার আগে প্রস্তাবিত আইনের পরিপূর্ণ খসড়ার ওপর সংশ্লিষ্ট খাতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনের মতামতসহ জনমত যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নেওয়া উচিত বলে টিআইবি মনে করে।