সামিউলের হত্যাকারীদের বিবেক ও মানবতাবোধ!
জসিম উদ্দিন জুবায়ের, বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : গতকাল (১৩ জুলাই, সোমবার) দিনভর বাংলাদেশের সকল বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদে সিলেটে ১৩ বছরের শিশু সামিউলকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য দেখেছে গোটা দেশের মানুষ। শিশুরা এ দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত। অভিভাবকদের কাছে অনেক শিশুরই প্রশ্ন ছিল- ‘ওকে ওরা এভাবে মারছে কেন, কি করেছে ও, বড় মানুষরা শিশুদের এভাবে মারে?’ নির্বাক ছিলেন অভিভাবকরা।
নির্যাতনের দৃশ্য দেখে শিশুদের মুখ থেকেও ‘বড় মানুষরা শিশুদের এভাবে মারে’! অর্থাৎ শিশুরাও বুঝতে পেরেছে, শিশু সামিউলকে নির্যাতনের সাথে জড়িতরা ‘মানুষ’ ছিলেন না। কোথায় ছিল এই মানুষেদের বিবেক, কোথায় ছিল মানবতা? নির্যাতনকারীদের মাঝে কি একজনও বিবেক সম্পন্ন মানুষ ছিলেন না? যারা দাড়িয়ে থেকে এমন পৈচাশিক দৃশ্য দেখেছেন, তাদের বিবেক কি একটুও নাড়া দেয়নি।
১৩ বছর বয়সী সামিউল আলমকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ আজ সারা দেশ। বিবেকবান মানুষ হতবাক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এত অনেকেই জানিয়েছেন তাদের লজ্জার কথা। কেউবা আবার অভিযোগ করেছেন, সামিউল দরিদ্র হওয়ায় পুলিশ ঘটনাটিকে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। অবশ্য এরই মধ্যে নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি সরিয়ে নিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।
সামিউলকে মেরে লাশ গুম করার সময় স্থানীয় লোকজন একজনকে ধরে ফেলেন। অন্যরা পালিয়ে যায়। এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়েছিলেন। গতকাল (সোমবার) সে জেদ্দায় ধরা পড়েন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
৮ জুলাইয়ের এই ঘটনার পরপরই লাশ গুম করার সময় মুহিত আলম নামের একজনকে ধরে স্থানীয় জনতা পুলিশে সোপর্দ করে। মুহিতকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। পলাতক আরও তিনজনকে গেপ্তার করতে পুলিশ মুহিতের নিকটাত্মীয় ইসমাইল হোসেনকে আটক করেছে। এ ছাড়া মুহিতের স্ত্রীকে গতকাল (সোমবার) রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের তদন্ত-তদারক করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি।